‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উদযাপনে গ্রামীণফোন ও ইউএনডিপি কভিড পরবর্তী সময়ে তরুনদের দক্ষতার উন্নয়নে মাস্টার ক্লাসের উদ্ধোধন

আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২১
0

[ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০২১]

দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দেশজুড়ে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তার উদ্দেশ্যে ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উপলক্ষে ১৫ জুলাই ‘গেট ফিউচার রেডি: নিড ফর স্কিলস’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও গ্রামীণফোন। তরুণদের দক্ষ করে তোলার প্রয়োজনীয়তার কৌশলগত গুরুত্ব এবং দেশের বিশাল যুব সমাজকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলার ক্ষেত্রে তাদের রূপান্তরের ওপর আলোকপাত করে এ কর্মসূচির অধীনে তরুণ ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে বেশ কয়েকটি অনলাইন ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়।
বৈশ্বিক মহামারি তরুণদের উন্নয়নে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এ প্রেক্ষিতে এ বছর প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেই উদযাপিত হচ্ছে ‘বিশ্ব যুব দিবস।’ আবার একইসাথে, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব প্রযুক্তিগত বিপ্লবকে ত্বরাণ্বিত করেছে। ফলে, গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং নিয়ত পরিবর্তনশীল চাকরির বাজারের কারণে রুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষতার উন্নয়ন তরুণদের সম্ভাবনা উন্মোচনে এবং সবার জন্য সমৃদ্ধ আগামীতে তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলবে।
‘গেট ফিউচার রেডি: নিড ফর ফিউচার স্কিলস’ ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, মহামারী মোকাবিলায় আজকের তরুনদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করা জরুরী। তরুনদের আধুনিক দক্ষতা উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান। মন্ত্রী আরও বলেন দেশকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এজন্য সবার সাথে একসাথে কাজ করবে।

এর আগে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান ‘গেট ফিউচার রেডি: নিড ফর স্কিলস’ বিষয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। যেখানে তিনি কোভিড-১৯ ও কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে তরুণদের সক্ষম হওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতার ওপর আলোকপাত করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক মহামারি সৃষ্ট স্বাস্থ্য ও আর্থ-সামাজিক সঙ্কটের মধ্যে তরুণরা কীভাবে বেড়ে উঠছে। তিনি বলেন, “তরুণদের প্রাধান্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে এবং ভবিষ্যতে তাদের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতার উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে দেশের সম্ভাবনা উন্মোচনে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তরুণদের দক্ষতার উন্নয়ন এবং বর্তমানের প্রযুক্তিগত বিপ্লবকে ত্বরাণ্বিত করা আমাদের কোভিড পরবর্তী যুগে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ পরবর্তী আমাদের প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে এবং দেশের ২০৪১ রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।” এছাড়াও, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী তরুণদের ক্ষমতায়নে নিজেদের নিরলস প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মাস্টারক্লাস সিরিজের ঘোষণা দেন।
ভবিষ্যতের প্রস্তুতিতে তরুণদের বিভিন্ন দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সক্ষমতা বাড়াতে ঈদুল আযহার পরে এ মাস্টারক্লাস সিরিজের উন্মোচন করা হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনার পরে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন ইউএনডিপি’র এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী। আলোচনায় ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে মানুষ পরীশ্রমি এবং সব সময়ই উৎপাদনশীল সেখানে সংকটে বা যেকােন সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা দরকার হয়ে থাকে। আমরা যদি কাউকেই এই সামাজিক নিরাপত্তা থেকে বাদ দিতে না চাই তাহলে আমাদের তথ্য ভিত্তিক পন্থা অবলম্বন করতে হবে। তথ্য প্রাপ্তি ও বিশ্লেষন করা বিষয়ে ইউএনডিপি এবং গ্রামীণফোন যেীথভাবে কাজ করতে পারে।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডি) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, “আধুনিক উৎপাদনশীলখাতে দক্ষ জনবলেন ব্যাপক অভাব দেখা দিচ্ছে অন্যদিকে শিক্ষিত তরুনদের বেকারত্বের হারও বাড়ছে। এখানে একটি গ্যাপ তৈরি হচ্ছে। কারন ট্রেনিংগুলো বাজার নির্ভর হচ্ছে না, কারিকুলামগুলো প্রয়োজনীয় দক্ষতা ভিত্তিক নয় এবং সর্বপরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে ইন্ডাস্ট্রির কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের এই বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে নজর দিতে হবে এবং বাজার চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনিং নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মশিউর রহমান, সিএএমপিই’র নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী এবং লোটে কাইজার চীফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার স্কিলস প্রোগ্রাম আই এল ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এদিন এর আগে গ্রামীণফোন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের পক্ষে জিপি অ্যাকসেলেরেটর “ইমপ্যাক্ট অব ফোরআইআর অ্যান্ড স্কিলস-রেডিনেস অব বাংলাদেশ’স স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম” নিয়ে এক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। স্টার্টআপগুলোর প্রবৃদ্ধি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয়ে সহায়তাদানের মাধ্যমে স্টার্টআপগুলোর ক্ষমতায়নে কাজ করে জিপি অ্যাকসেলেরেটর।

জিপি অ্যাকসেলেরেটর আয়োজিত এ ওয়েবিনারে বেসিস’র প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশিন অব বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট শামীম আহসান, গ্রামীণফোনের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম, ইউএনডিপি এশিয়া প্যাসিফিকের ইয়ুথ সোশ্যাল অন্টারপ্রনারশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন কনসালটেন্ট সে ওয়াই চেং এবং ইন্টেলিজেন্স মেশিনস’র প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ অলি আহাদ অংশগহ্রণ করেন এবং আমাদের স্টার্টআপগুলো কীভাবে ডিজিটাল রূপান্তরের সুবিধা পেতে পারে তা নিয়ে তাদের ভাবনা তুলে ধরেন। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস মো. খায়রুল বাশার।