বোরো ধানের কেটে নেয়া গাছ থেকে দ্বিতীয় বার ধান চাষে আলোড়ন সৃষ্টি ভূরুঙ্গামারীর কৃষকদের

আপডেট: জুন ২১, ২০২১
0

ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রামে কেটে নেয়া বোরো ক্ষেতের ধান গাছের গোড়া থেকে দ্বিতীয় বার ধান উৎপাদন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কৃষকরা।
উপছেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে কৃষকরা তাদের জমিতে কেটে নেয়া বোরো ধানের গোড়া থেকে ধানের শীষ বের হয়েছে। সেগুলো পেকে গেছে।ধানের শীষ ছোট হলেও চিটা কম।এতে ফলন ভাল হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে কৃষকদের এই পদ্ধতির ধান চাষকে বলা হয় কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় ‘রেটুন শষ্য আবাদ’।

উপজেলার সদর ইউননিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের কৃষক আতাউর জানন, গত বোরো মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে বি আর-২৮ ধান চাষ করেছিলাম। গত মে মাসের শুরুতে ধান কেটে ঘরে তুলেছি। এরপর ওই জমিতে পড়ে থাকা ধান গাছের মুড়ি (গোড়া) নষ্ট না করে পুনরায় ধান উৎপাদন করতে যত্ন নিয়েছি এবং ধান গাছের গোড়া কাঁচা থাকায় দ্রুত নতুন কুশি বের হয়। তবে কোনো প্রকার সেচ ছাড়াই শুধু মাত্র সামান্য পরিমাণে সার প্রয়োগ আর কয়েক বার কীটনাশক স্প্রে করে চাষকৃত এসব মুড়ি ধানের মাঝারি ফলন পেয়েছি।
চরভূরঙ্গামারী ইউনিয়নের কৃষক ইউনুছ আলী জানান, একই জমিতে গত দু’দিন আগে কেটে নেয়া ধান গাছের গোড়া থেকে পূনরায় উৎপাদিত ধান কেটেছি। এক বিঘা জমিতে ফলন পেয়েছি প্রায় ৪ মন ধান। এতে নিজেই শ্রম দিয়ে ৫ কেজি সার ও কীটনাশক বাবদ তার খরচ হয়েছে মাত্র ৩শ টাকা। এতে এই ৪ মন ধানই বাড়তি লাভ হয়েছে আমার।
ধান গাছের গোড়া (মুড়ি) থেকে ধানচাষ-এর বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও রোকনুজ্জামান জানান, ধানের মুড়ি থেকে আবার ধান চাষ করা যায়। বিশেষ করে ব্রি ধান-২৮ ও ২৯ ধানের গোড়া কাঁচা থাকে। এসব ধান কাটার পর ধান গাছের মুড়ি থেকে কুশি বের হয়। আর এসব মুড়ি থেকে পুনরায় ধান উৎপাদন সম্ভব। এতে খরচ নেই বললেই চলে। চলতি বছর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের অনেক কৃষক কেটে নেয়া বোরো ধান গাছের মুড়ি থেকে ধান চাষ করে সাফল‍্য পেয়েছেন।

এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজামান বলেন, এই পদ্ধতিতে ধান চাষ কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় ‘রেটুন শষ্য আবাদ’ বলা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বোরো ধান কেটে নেয়ার পর পরবর্তী আমন আবাদের জন্য প্রায় ২ মাস সময় পান কৃষকরা।
দুইমাস সময়ের মধ্যে পড়ে থাকা পতিত জমিতে এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করে কৃষকরা বাড়তি ফসল পেতে পারেন।এটি বেশী লাভজনক না হলেও যেসব কৃষক নিজে পরিশ্রম করেন তারা একেবারে সীমিত খরচ করে একই জমিতে বাড়তি ফসল উৎপাদন করে লাভবান হতে পারবেন।
###
আমিনুর রহমান বাবু