ভারত করোনা আক্রান্তে বিশ্বে ১নম্বর : মোদীকে আর্ন্তজাতিক মিডিয়ার তুলাধুনা

আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২১
0

ভারতে কোভিডের বাড়বাড়ন্তের জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোদীকে দায়ী করে তুলোধোনা করছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে – খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ।

কোভিডের বাড়বাড়ন্তের জেরে গোটা বিশ্বে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ভারতের পরিস্থিতি। ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে গোটা সপ্তাহজুড়ে শুধু ভারতের চর্চা। শনিবারই দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে তিন লক্ষের কাছে পৌঁছেছে। যা গোটা বিশ্বে একদিনে সর্বাধিক, অতিমারী শুরুর পর থেকে যা প্রথমবার হল।

ব্রিটেনের তথা বিশ্বের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্য বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, “বেশ কয়েকটা কারণে ভারতে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধির দফারফা, মাস্কহীন মানুষ, একইসঙ্গে কুম্ভমেলায় হাজার হাজার মানুষের ভিড়। এই রেকর্ড সংখ্যক রোগীর ভিড়ে হাসপাতালগুলিতে বেড ও অক্সিজেনের ঘাটতি হয়েছে। রোগীর পরিজনরা চিকিৎসার জন্য হাহাকার করছেন।”

এই অবস্থায় ভারতে একাধিক রাজ্যে হাসপাতালে বেড পাচ্ছেন না রোগীরা। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন করোনা রোগীরা। অক্সিজেনের সিলিন্ডার, হাসপাতালের বেডের জন্য বাড়িতেই মৃত্যু হচ্ছে বহু মানুষের। এককথায় দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এভাবে যে ভারতকে তছনছ করবে তা বোধহয় কেউ কল্পনাতেও আনেননি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এখন শুধু ভারতের হাহাকারের খণ্ডচিত্র।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নামী সংবাদসংস্থা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট তীব্র ভর্ৎসনা করেছে ভারতের বেপরোয়া মনোভাবকে। তারা লিখেছে, “এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত। খুব দ্রুত বিধিনিষেধ শিথিল করায় ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। হাজার হাজার মানুষ স্টেডিয়ামে বসে ক্রিকেট ম্যাচ দেখছেন সিনেমাহল খুলে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার কুম্ভমেলায় ধর্মীয় জমায়েতের অনুমতি দিয়ে দিচ্ছে, ভারত নিজেই বিপদ ডেকে এনেছে।”

ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধোনা করেছে। সম্পাদকীয়তে প্রকাশিত হয়েছে, “ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেশের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। তোষামোদকারীদের পরামর্শ শুনে আত্মবিশ্বাসে ভুগেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। নিজের বোধবুদ্ধি হারিয়ে চূড়ান্ত গাফিলতি করেছেন। উনি নিজের ভুল স্বীকার করে সিদ্ধান্ত সংশোধন করুন। তাঁর উচিত বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় সেটা দেখা। সরকার তার প্রতিশ্রুতি রাখুক। তাঁর দলের আদর্শের বাইরে গিয়ে এখন একতার বার্তা দেওয়া, জনস্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অবনতির জন্য ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদরা মোদীকে তাঁর চিন্তাভাবনার অভাবের জন্য তুলোধোনা করবেন।”

অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, “বিপর্যয় খুব সহজে এবং পরিকল্পনামাফিক এড়ানো যেত। তিনটি কারণে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে- সরকারের প্রতিক্রিয়া, মানুষের ব্যবহার এবং করোনা ভ্যারিয়েন্ট।” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনের দাবি, “শক্তি ও ক্ষমতার সঙ্গে প্রয়োজন ছিল দায়িত্ববোধের। দায়িত্ব থেকে এড়িয়ে গিয়েছে সরকার। মোসাহেবরা মন্ত্রিসভায় থেকে প্রধানমন্ত্রীকে করোনা মোকাবিলার জন্য শুধু বাহবাই দিয়ে গেছেন। এদিকে, টেস্টিং মন্থর হয়েছে, আর মানুষকে আরও বেপরোয়া হতে এবং করোনাকে পাত্তা না দেওয়ায় উৎসাহিত করেছে।”