ভারত থেকে টিকা পাচ্ছে না বাংলাদেশ: হাইকমিশনের চিঠি

আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২১
0

ভারত থেকে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ শিগগিরই পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

শনিবার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া একটি চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছে।এতে বলা হয়, কাঁচামালের সংকট ও ভারতে বিপুল অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে ভ্যাকসিন সরবরাহে দেরি হচ্ছে।চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারত তার অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাকসিন সরবরাহের যেসব চুক্তি করেছিল, সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিন উৎপাদনের চেষ্টা চলছে।

সেরামের প্রধান নির্বাহী আদর পুনেওয়ালা গত সপ্তাহে এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, রপ্তানির বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। আমরা এখন মনে করছি যে এ সময় আমাদের দুমাস রপ্তানির দিকে নজর দেওয়া উচিত নয়। জুন-জুলাইয়ের দিকে আমরা অল্প আকারে রপ্তানির বিষয়ে চিন্তা করতে পারব।এখন আমরা দেশের (ভারত) প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতে যাচ্ছি।

ভ্যাকসিনের কাঁচামাল রপ্তানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়ে এতে আরও বলা হয়েছে,
প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলো কাঁচামাল আটকে দিয়েছে, এ বিষয়টিও সবার জানা। এতে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরামের ওপর প্রভাব পড়েছে।

চিঠিতে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ যৌথ উত্পাদনের বিষয়ে হাইকমিশন বলেছে, আইসিডিডিআর,বি এবং ভারত বায়োটেক ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কোভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য চুক্তি করেছিল।
তবে, সেটা এখনও বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা কোভিশিল্ডের চেয়ে বেশি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘আমাদের বর্ধিত সক্ষমতা ও একাধিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ যদি কোভ্যাক্সিন যৌথভাবে উৎপাদন শুরু করে তবে বাংলাদেশে তৈরি ভ্যাকসিন ভারতসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোতে সরবরাহ করা হবে। সেই সুযোগটি এখনও হারিয়ে যায়নি। আমরা এর সদ্ব্যবহার করতে পারি।

বাংলাদেশের সরকার গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য সেরামের সঙ্গে চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, এ পর্যন্ত দুই কিস্তিতে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারত সরকার উপহার হিসেবে ৩৩ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠিয়েছিল।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ভারতীয় হাইকমিশনকে চিঠি দিয়ে ভ্যাকসিন সরবরাহের বিষয়ে তথ্য চেয়েছিল।

সম্প্রতি ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া এবং ভ্যাকসিনের ঘাটতি থাকায় দেশটির সরকার নিজস্ব চাহিদা মেটাতে এক মাস আগে ভ্যাকসিন রপ্তানি স্থগিত করে।

এদিকে, বাংলাদেশে সেরামের স্থানীয় প্রতিনিধি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেছেন, আগাম অর্থ পরিশোধের পরও ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ করার কোনো অধিকার সেরাম ইনস্টিটিউটের নেই।