মজনুকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে কিন্তু স্বীকার করছে না তারা –রিজভী

আপডেট: মে ২২, ২০২৩
0

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন , বিগত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নির্যাতন-নিপীড়ণের শিকার হচ্ছে গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার মানুষ। বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত চলমান কর্মসূচিকে বানচাল করতে সরকার গায়েবী মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা, অন্ধ ও পঙ্গু করে যাচ্ছে।”

আজ সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মজনুকে কাল রোববার মধ্যরাতে ডিবি পুলিশে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আর হদিস দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী অবৈধ সরকার নানা প্রকার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা চরম হ্রাস পাওয়াসহ সারাদেশ ডুবে আছে অনাচার ও নৈরাজ্যের অমানিশায়। জনগণের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে শেখ হাসিনা যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের অধিকারী হয়েছেন সেটি ধরে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছেন, সেজন্যই বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে নিপীড়ণ-নির্যাতনের নিষ্ঠুর বিভিষিকা।

এরা বিগত ১৪ বছর ধরে জাতির ওপর যে ঘোর দুর্দিন বিস্তার ঘটিয়েছে সেটির একমাত্র উদ্দেশ্য যেনতেন প্রকারে অবৈধ সিংহাসনকে আঁকড়ে রাখা। আওয়ামী সরকার ব্যাংক লুটেরা ও টাকা পাচারকারী গোষ্ঠীর আদর্শ হয়ে উঠেছে। তাই সুখের স্বর্গ ধরে রাখতে বিরোধীদলশুন্য বাংলাদেশ গড়তে তারা দিনরাত্রী গলদঘর্ম হচ্ছে।

রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করেন যে , ” গতকাল রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে নিজ বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পুলিশ মজনুকে আটকের কথা এখনও পর্যন্ত স্বীকার কিংবা তার কোন হদিস দিচ্ছে না। অথচ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সবার সামনে থেকে মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনও স্বীকার করছে না। এই ঘটনায় মজনু’র পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শঙ্কিত। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং-৪৫২৩/২০২১ এর আদেশ এখনও বলবৎ রয়েছে। উক্ত আদেশে কোন উপযুক্ত আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা ব্যতিরেকে জনাব রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেফতার বা হয়রানী না করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাও রয়েছে যেন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া পেন্ডিং মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো না হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে হানা দিচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশকেই এক আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করা হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিন ধরে খুলনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, নেত্রকোণা, ফেনীসহ বেশকিছু জেলায় বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও ঢাকা, যশোর, সিলেট, ঝিনাইদহ ও রাজশাহীতেও একইভাবে চলছে রক্তাক্ত আক্রমণ, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্বিচারে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও আসবাবপত্র ভাংচুর এবং মিথ্যা মামলার হিড়িক চলছে।