মজনু’র মতো সংগ্রামী নেতাদেরকে গ্রেফতার সরকার নিরাপদে থাকতে পারবে না—-মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মে ২২, ২০২৩
0

গতরাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়া এবং এখনও পর্যন্ত তার কোন হদিস না দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একদলীয় দুঃশাসনের এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা শুণ্যের কাছাকাছি, জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির ফলে পরিবহন ভাড়াসহ জনজীবনে যে দূর্বিষহ অবস্থা বিরাজমান সেটি আড়াল করতেই সরকার আরও বেশী জুলুমের পথ বেছে নিয়েছে। গণতন্ত্রকামী মানুষ প্রতিনিয়ত নির্যাতন-নিপীড়ণের শিকার হচ্ছেন।

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার বিএনপি’র জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করতে এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকারের বিরুদ্ধে কোন আওয়াজ উঠলেই তারা বেসামাল হয়ে পড়ে। ফলে দু:শাসন আরও বেশী ভয়াবহ রুপ লাভ করেছে। গায়েবী মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, শান্তিপূর্ণ যেকোন কর্মসূচির ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে বিএনপি’র নেতাকর্মীকে হত্যা ও অঙ্গহানী করার এক দানবীয় নীতি বাস্তবায়ন করছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী।

দলীয় চেতনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাজিয়ে ‘প্রাইভেট বাহিনী’র’ ন্যায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এরা আইন শৃঙ্খলার কাজে লিপ্ত না থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সশস্ত্র দলীয় ক্যাডার এবং সাজানো পুলিশ প্রশাসন একযোগে নব্য নাৎসী বাহিনীর ন্যায় আচরণ করছে। চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারকে রক্তাক্ত পন্থায় দমন করতে দ্বিধা করছে না তারা। দুঃশাসনের নিঃশব্দ পরিবেশ সৃষ্টি করতেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গতরাতে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

উপযুক্ত আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা ব্যতিরেকে রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেফতার বা হয়রানী না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্বেও মজনুকে তুলে নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণরুপে উচ্চ আদালতের প্রতি অসম্মান জানানো। ক্ষমতাসীনরা আইন কানুনের কোন তোয়াক্কা করে না। তারা রাষ্ট্রক্ষমতার জোরে একের পর এক বেআইনী কাজ করে সীমা লংঘন করে যাচ্ছে। এই অগণতান্ত্রিক সরকার গণতন্ত্রের বিধি-বিধান নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা করে না বলেই বিএনপিসহ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ এই সরকারের চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। বিরোধী সভা-সমাবেশসহ মত প্রকাশে নগ্নভাবে বাধা প্রদান করেও তারা আশস্ত হতে পারছে না।

তাই মজনু’র মতো সংগ্রামী নেতাদেরকে গ্রেফতার করে শঙ্কামুক্ত হতে চায়। আমি সুষ্পষ্টভাবে বলতে চাই-জনগণের প্রতি দমননীতি প্রয়োগ করে সরকারের ক্ষমতা আর নিরাপদ থাকবে না। রাষ্ট্রীয় অনাচার বৃদ্ধি করে আর সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখানো যাবে না।

আমি সরকারের প্রতি আহবান জানাই-গণবিরোধী জুলুমের পথ থেকে অবিলম্বে সরে আসুন, গায়েবী মামলা ও গণগ্রেফতার বন্ধ করুন, জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিন। পৃথিবীতে কখনোই স্বৈরাচার বেশিদিন টিকতে পারেনি, আটককৃত নেতাদের মুক্তি দিন এবং এই মূহুর্তে পদত্যাগ করে তত্তাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবৃতিতে অবিলম্বে রফিকুল আলম মজনু’র বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তির জোর আহবান জানান।