মুজিব বর্ষে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সর্বোচ্চ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা সরকারের

আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২১
0

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করছে সরকার। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সাথে নতুন করে চুক্তি এবং পুরোনো চুক্তিগুলো ঝালাই করার কাজও করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন সর্বোচ্চ ভালো অবস্থানে রয়েছে। অপরদিকে রাজনৈতিকভাবেও আওয়ামীলীগ প্রতিবেশীদের সাথে সর্ম্পক উন্নয়নের চেষ্টা করছে।

ভারত-চীনের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে গত কয়েকবছর ধরে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে দুই দেশের সর্ম্পক উন্নয় সমানতালে চলছে। দেশের বাজারে বড় বড় বিনিয়োগ করছে চীন। অপরদেকে ভারতের সঙ্গে সর্ম্পক সুদৃঢ় রাখতে একের পর এক সমঝোতা স্বারক, ট্রানজিট দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতিমধ্যে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভূটানের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীগণ বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে। শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করে বাংলদেশ। এটাই কোনো দেশের সাথে বাংলাদেশের প্রথম পিটিএ চুক্তি।

ভুটানের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা: লোটে শেরিং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।

১৮ মার্চ প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে সকালে ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। শেখ হাসিনার কার্যালয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহর বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে ৪টি সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়।

বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ আমদানি করতে চায় ভুটান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বেশি বন্দর নির্মাণের ওপর জোর দেন। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য তিনি এ বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক গঠনের কথা বলেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং তার দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে এককালীন ফুলটার্ম ভিসা এবং মাল্টিপল এন্ট্রি সুবিধা দেয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন। বাংলাদশে ভূটান নৌযোগাযোগ স্থাপনের ব্যাপারে ঐকমত হয়েছে।

মোদীর সফরে বাংলাদেশ তাকিয়ে রয়েছে অভিন্ন ৬ নদীর পানি বন্টন চুক্তি নিয়ে কি করছে ভারত তা দেখার জন্য। অপর দিকে প্রতিদিন বিরোধী দলগুলো মোদীর সফরকে কেন্দ্র করে ফুসেঁ ঊঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে তুমুল আন্দোলন চলছে মোদীর আগমন বিরোধী মিছিল মিটিংয়ে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগে মোদীকে বাংলাদেশ সফরে দেখতে চায় না বিশিষ্ট আলেম-ওলামারা। তারা ২৬ মার্চ কর্মসূচি দেয়েছে। অপরদিকে সরকাররের প্রতি আহবান জানিয়েছে মোদীর সফর বাতিল করতে। কিন্তু সরকার ভারতের সঙ্গে সর্ম্পক আরো দৃঢ় করতে আন্দোলন সংগ্রাম বন্ধ করতে প্রশাসনকে দিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এদিকে চীনের জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের দায়ে টোটাল পশ্চিমা বিশ্ব ১৭মার্চ চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আর সেদিন সেই ১৭ মার্চে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে শুরু হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর জাতীয় আয়োজন ‘মুজিব চিরন্তন’। এ উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় ওই কথা বলেন শি জিনপিং।

এসময় শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সংস্কার কার্যক্রম ও উন্নয়নে এগিয়ে চলেছে। দ্রুত প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের উন্নতিতে চীন উচ্ছ্বসিত।

শি জিনপিং বলেছেন, ”বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক সেতুবন্ধন রচনায় যারা অবদান রেখেছেন, তাদের সবসময় স্মরণ করা উচিত এবং এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এখন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে হবে।”

আঞ্চলিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর জাতিসঙ্ঘে আনা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ।