মুমূর্ষু নবজাতকের অ্যাম্বুলেন্সও পেল না ফেরি, ফিরে গেলো নিস্তেজ হয়ে

আপডেট: মে ১০, ২০২১
0

কয়েক ঘণ্টা আগেই জন্মেছে নবজাতক শিশুটি। শ্বাসকষ্টে মুমূর্ষু পরিস্থিতি হওয়ায় মা আঁখিকে হাসপাতালে রেখেই নবজাতকটিকে নিয়ে স্বজনরা ছুটছেন ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু বাংলাবাজার ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মিললো না ফেরির দেখা। উন্নতির বদলে ঘাটে দীর্ঘ সময় আটকে থেকে আরো নিস্তেজ হয়ে পড়া শিশুটিকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত শরীয়তপুরেই ফিরে যেতে বাধ্য হলো স্বজনরা।

রোববার বাংলাবাজার ঘাটে এম্বুলেন্সের ক্ষেত্রেও এমন কঠোর ভূমিকা দেখায় বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা। এদিকে মাছ, তরমুজসহ কাঁচামালে পচন ধরায় বাংলাবাজার ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি ও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। জরুরি রোগীরা ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে মোটরসাইকেল, ৩ চাক্কার যানবাহনে এসে ঘাটে ও গন্তব্যে কয়েকগুণ ভাড়া গুনে পৌঁছাচ্ছেন।

বিআইডব্লিউটিসিসহ ঘাট সূত্রে জানা যায়, যাত্রী নিয়ন্ত্রণে যেন কোন বিধি নিষেধই মানতে চাইছেন না দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। রোববার সকাল থেকে বিকেলে বাংলাবাজার ঘাট থেকে ২টি ফেরি জরুরি এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন নিয়ে পার হয়।

তবে যাত্রীদের চাপে জরুরি যানবাহন তোলা পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসিকে বেগ পেতে হয়। শিমুলিয়া থেকে যে কয়টি ফেরি এসেছে সেগুলোতে যাত্রী চাপে পা ফেলানোর জায়গা ছিল না। সকাল থেকেই উভয় পাড়ে যাত্রী ও যানবাহনের প্রচণ্ড ভিড় শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে যাত্রী ও যানবাহনে সয়লাব হয়ে যায় ঘাট এলাকা। ঘাট থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রী ও যানবাহনগুলো। অনেকে এম্বুলেন্সে যাত্রী বেশে পার হওয়ার চেষ্টা করেন।

শরীয়তপুরের আটং এলাকার নবজাতকটির খালা বলেন, কয়েক ঘণ্টা আগে শিশুটির জন্ম হয়েছে। ওর মা এখনো বেডে। বাচ্চাটির শ্বাস কষ্ট হওয়ায় ওকে ঢাকা নিচ্ছিলাম। কিন্তু কোন কিছুতেই ফেরি ছাড়লো না। বাচ্চাটি আরো নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে।
তাই আবার শরীয়তপুর হাসপাতালেই ফিরে যাচ্ছি।

১৫ দিনের আরেক নবজাতক রেদোয়ানের মা লাবনী বেগম বলেন, বাচ্চাটি খুব অসুস্থ তাই ঢাকায় যাচ্ছি। কিন্তু ফেরি ছাড়ছেই না।
কি যে করবো, এসে ভুল করলাম মনে হয়। রোগীরাও পার হতে পারবে না । এটা কেমন নিয়ম ?

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ফেরি বন্ধ রাখতে বলেছে, তাই বন্ধ।
জরুরি এম্বুলেন্স বা রোগীর কথা বললে তিনি বলেন, ফেরি বন্ধ।