মেহনতি শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে সুসংহত করা নববর্ষের অঙ্গীকার : শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

আপডেট: ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান আজ এক যৌথ বিবৃতিতে ইংরেজি নবর্বষ উপলক্ষে দেশে প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমিক-মজুরসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, নববর্ষ নতুন আশা ও সম্ভাবনা নিয়ে আসে। নববর্ষ সকলের মাঝে প্রাণের স্পন্দন তৈরি করে। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ পেছনে ফেলে নতুন বছরে সর্বস্তরের শ্রমিক মজুরসহ দেশবাসী অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। নতুন বছর সকলের জীবনে অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে এই দোআ করছি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে পৃথিবী দুঃসময় পার করছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পৃথিবীর স্বাভাবিক কার্যক্রম। একের পর এক করোনার ঢেউ পৃথিবীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দিচ্ছে না। করোনার ছোবলে ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। দফায় দফায় লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়েছে অসংখ্য কল-কারখানা। চাকুরিচ্যুত হয়েছে অসংখ্য শ্রমিক। কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়েছে লাখো লাখো শ্রমিক পরিবারকে। এই দুঃসময়ে শ্রমিকের পাশে সরকার-মালিকপক্ষকে দেখা যায়নি। সরকার নামকাওয়াস্তে প্রণোদনা দিলেও শ্রমিকের ঘরে প্রণোদনা পৌঁছায়নি। দুঃসহ দুর্দিন এখনো শ্রমিকের পক্ষে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, যুগের পর যুগ শ্রমিকরা শোষিত হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে শ্রমিকের ন্যায্য ন্যূনতম মজুরি এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মত মৌলিক অধিকারের জন্য এখনো শ্রমিকদের সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকরা সামান্য মজুরি পেয়ে কোন মতে জোড়াতালি দিয়ে সংসার চালাচ্ছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের জীবন আরও করুণ। তাদের জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে দারিদ্রের সাথে লড়াই করতে হচ্ছে। দিন এনে দিনে খেতে হয় এই সকল শ্রমিকদের। একদিন কোন কারণে কর্ম যোগাড় করতে না পারলে পুরো পরিবার নিয়ে উপোষ থাকতে হয়। উভয় খাতের শ্রমিকদের সন্তানরা মান সম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। শ্রমিকরা বঞ্চিত চিত্ত বিনোদন থেকে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকের প্রকৃত অধিকার আদায়ের জন্য ইসলামী শ্রমনীতির বিকল্প নেই। মেহনতি শ্রমিকের অধিকার আদায়ের এই মহান সংগ্রামকে সুসংহত করা আমাদের নববর্ষের অঙ্গীকার। আমরা চাই মালিক শ্রমিক ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি মালিক ও শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে। শ্রমিককে তার ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিলে মালিকপক্ষ ঠকবে না বরং মালিকপক্ষের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও উন্নতি ঘটবে। প্রতিটি শ্রমিকের জন্য ন্যূনতম ন্যায্য মজুরি প্রতিষ্ঠা। শ্রমিকের মৌলিক অধিকার তথা অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা সেবা, মান সম্মত বাসস্থানের পাশাপাশি শ্রমিকের সন্তানের সু-শিক্ষা নিশ্চিত করা মালিকপক্ষের পাশাপাশি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা নতুন বছরে শ্রমিকের সকল অধিকার বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।