রাজধানীর ভাটারায় গৃহশ্রমিক কুলসুম আক্তার নির্যাতনে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের

আপডেট: জুলাই ২, ২০২১
0

রাজধানীর ভাটারায় কুলসুম আক্তার (১৪) নামের এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সাথে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্ববান জানাচ্ছে।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, কুলসুম আক্তার (১৪) রাজধানীর ভাটারায় কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় একটি বাসায় গত আটমাস ধরে বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আরিফের বাসায় কাজ করে আসছেন। কাজে একটু ত্রুটি হলেই আরিফ ও তার স্ত্রী মাহফুজা রহমান তাকে মারধর করতেন। গরম পানি ঢেলে দেওয়া হতো তার গায়ে। এমনকি গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকবার সে বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তবে বুধবার বাসা থেকে বেরিয়ে সে কুড়িল বিশ্বরোডে বোন ফাতেমার কাছে গিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি জানায়। ফাতেমা জানান বোনকে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করতে চেয়েছিল, কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাদের জানানো হয়েছে, পুলিশ ছাড়া ভর্তি করা যাবে না। ভাটার থানা পরিদর্শকের উদ্ধিতি দিয়ে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে এ বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সা¤প্রতিক বছরগুলোতে গৃহকর্মে নিযুক্ত শ্রমিকের উপর নির্যাতন, হত্যা, ও মানবাধিকার লংঘনের মতো প্রভৃতি ঘটনা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে গেছে। গৃহশ্রমিক হিসেবে যেমন তাদের রয়েছে কিছু ন্যায্য অধিকার তেমনি রয়েছে মানুষ হিসাবে মর্যাদা পাবার অধিকার। এই করনাকালীন সময়ে গৃহশ্রমিকরা সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে তেমন কোন সাহায্য বা সহযোগিতা পায়নি এবং তাদের একটা বড় অংশই চাকুরিচ্যুত এবং কর্মহীন। ফলে তাদের বেঁচে থাকাটাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। এইরকম পরিস্থিতিতে তাদের উপর এই ধরনের সহিংসতার ও নির্যাতনের ঘটনা অমানবিকতার চরম নিদর্শন। সুতরাং এই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিকে দ্রæত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক।

গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক আরও মনে করছে, স¤প্রতি সরকার ঘোষিত গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ বাস্তবায়ন না হওয়ায় দেশে একের পর এক অনাকাঙ্খিত কারণে গৃহশ্রমিকের মৃত্যু ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। তাই গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক অবিলম্বে নীতি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্ববান জানাচ্ছে।