রাজশাহীর চারঘাট সড়ক বাড়ির আঙ্গিনায় নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস গাছের আগ্রাসন

আপডেট: মার্চ ৪, ২০২১
0

আবু সুফিয়ান,রাজশাহীঃ

রাজশাহীর
চারঘাট উপজেলার গ্রামীণ সড়কের
পাশে, ফসলি জমির আইল, বসতঘরের
আঙিনাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিষিদ্ধ
ইউক্যালিটাস গাছের আগ্রাসন।
সবধরনের মাটিতে স্বল্পখরচে
অল্প জায়গায় দ্রুত বর্ধনশীল এই
গাছের প্রতি মানুষের রয়েছে
লোভনীয় চাহিদা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চারঘাটের
গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে ও বাড়ির
আঙিনাসহ বিস্তীর্ণ মাঠে বিভিন্ন
ফসলের সঙ্গে ও পুকুরের পাশে
রোপণ করা হয়েছে ইউক্যালিপটাস
গাছ। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,
হাট-বাজার সবখানেই শোভা পাচ্ছে
এই নিষিদ্ধ গাছ।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে,
ইউক্যালিপটাস গাছ মানবদেহ,
পোকামাকড় ও পাখিদের জন্য
যথেষ্ট ক্ষতিকর। বসতবাড়িতে অধিক
পরিমাণে ইউক্যালিপটাস গাছ থাকলে শিশু
ও বৃদ্ধদের শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা
থাকে। একটি পূর্ণবয়স্ক ইউক্যালিপটাস
গাছ ২৪ ঘণ্টায় ভূগর্ভ থেকে প্রায় ৯০
লিটার পানি শোষণ করে।
শুধু পানিই নয় খনিজ লবণও শোষণ
করে। অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড
নিঃসরণ করার ফলে তাপমাত্রা বেড়ে
যায়। ২০ থেকে ৩০ বছর কোনো
স্থানে গাছগুলো থাকলে সেখানে
অপর প্রজাতির কোনো গাছ
জন্মাতে পারে না। এই গাছে
কোনো পাখি পর্যন্ত বাসা বাঁধে না।
উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কৃষক
আব্দুল কাদের বলেন, ইউক্যালিপটাস
গাছের কারণে জমিতে ধান হয় না। জমি
সবসময় খাঁ খাঁ করে। আগে বুঝতে না
পারলেও এখন কৃষকরা জেনেছেন
‘ঘাতক’ ইউক্যালিপটাসের ক্ষতিকর কারণ।
শলুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সিপন
উদ্দীন বলেন, সরকারিভাবে এ
গাছের বনায়ন নিষিদ্ধ হলেও এটি
অনেকের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ
করে এ দেশের নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও
মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন কাঁচা ও
সেমিপাকা ঘর নির্মাণে এ গাছ ব্যবহার
করেন। এ গাছটি পরিবেশ ও
স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ঙ্কর।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা বন
কর্মকর্তা এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন,
পরিবেশ উপযোগী না হওয়ায় ২০০৮
সালে সরকারের বন ও পরিবেশ
মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে দেশে
ইউক্যালিপটাসের চারা উৎপাদন ও বিপণন
নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও মানুষ না
জেনে ইউক্যালিপটাসের চারা বপন
করছেন। তবে এ ব্যাপারে বনবিভাগ
থেকে সামাজিক সচেতনতা তৈরিতে
প্রচারণা চালানো হচ্ছে।