রূপগঞ্জে অগ্নিকান্ডের দায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এড়াতে পারে না- বাপা

আপডেট: জুলাই ১১, ২০২১
0

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস কারখানায় একটি ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জন মৃত্যুবরণ করেন এবং আরও অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। করোনার ভয়াল থাবা ও লকডাউনে যখন মানুষের জীবন বিপর্যস্ত, তখন রূপগঞ্জের অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকান্ডের দায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারে না।
বাপা সভাপতি সুলতানা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল এক বিবৃতিতে একথা বলেছেন। তারা বলেন,

ভবনটি নির্মানের ক্ষেত্রে যথাযথ বিল্ডিংকোড মানা হয়নি। ভবনে নিজস্ব আগুন নেভানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও জরুরী নির্গমনপথও ছিল না। অনেক শিশু শ্রমিক এই কারখানায় যুক্ত ছিল যা সম্পূর্ণ বে আইনী। ভবনের ছাদের সিড়ি ও কাচিগেট মালিক পক্ষ্যের নির্দেশে সবসময় তালাবদ্ধ থাকতো বলে জানা যায়, যার জন্যে হতাহতের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি শিল্প-কারখানায় অগ্নি নির্বাপন ও জরুরী নির্গমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর, দেশি-বিদেশী বেসরকারী কয়েকটি সংস্থা ও জোট কাজ করে। কিন্তু তারমধ্যেই অর্ধশতাধিক প্রাণহানির এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, তাজরীন ফ্যাশন এবং রানা প্লাজার মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডসমূহের যথাযথ কারণ নিরূপণ ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সেইসাথে, এমন ঘটনা নিয়ন্ত্রণ এবং মোকাবিলা করার জন্য এ যাবৎ গৃহীত পদক্ষেপসমূহও সঠিকভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি ।

এরকম প্রতিটি দূর্ঘটনার পর-ই আমরা সরকার ও প্রসাশনকে নড়েচড়ে বসতে দেখি। প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ করতেও দেখা যায়। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত হয় কিন্তু প্রকৃত কারণ জানা যায় না এবং দোষীদের শাস্তি হয় না । কয়দিন পর পুরনো ঘটনাগুলো আবারো লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায় ।

আমরা মনে করি তদারককারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ এবং এ ব্যর্থতাকে পুঁজি করে দুষ্কৃতিকারীরা এ ধরনের বিপজ্জনক ও ব্যবহার অনুপযোগী/ শ্রমিক অবান্ধব এবং পরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মান নিশ্চিত না করায় বার বার ঘটছে এ ধরনের মর্মান্তিক দূর্ঘটনা যার শীকার হচ্ছে দেশের খেটে খাওয়া নিরীহ মানুষ।

নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানানোর পাশাপাশি পূর্বের অগ্নিকান্ডগুলোর বিচার না হওয়ায় আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি ।একইসাথে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।