রেলমন্ত্রী সুজনের লোকজনেরা পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করেছে —- মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মার্চ ১২, ২০২৩
0

বিএনপিকে আতঙ্কে রাখতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করেছে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের লোকজনেরা ভিলে অভিযোগ করেছেনদিলটির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পঞ্চগড় জেলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ঘরে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন এর জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি গঠিত পরিদর্শন ও তদন্ত টিম এর রিপোর্টের ভিত্তিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তদন্ত রির্পোট পেশ করে গণমাধ্যমকে বলেন , ”’আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের ভিকটিমরা প্রকাশ্যই বলেছে, আওয়ামী লীগের লোকজন বিশেষ করে পঞ্চগড় সদরের সংসদ সদস্য ও বর্তমান রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজনের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গের নেতৃত্ব ও সক্রিয় অংশগ্রহণে এ ঘটনা ঘটিছে। ঘটনার পর রেলমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসলে ক্ষতিগ্রস্তরা চীৎকার করে তাকে বলেন যে ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী আব্দুর রহমান ও তার ছেলে মোতাহার মন্ত্রীর আশেপাশেই উপস্থিত আছে। এই হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা না হলে তাঁরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন। রেলমন্ত্রীর কোনো সদুত্তর না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা তাঁর সামনেই নানা ধরনের ¯েøাগান দিতে থাকেন এবং হাউমাউ শুরু করেন। ”

মহাসচিব জানান, এই ঘটনা এবং ঘটনা-পরম্পরার গভীরে গেলে এটা স্পষ্ট যে এটা কোন আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিত ঘটনা। নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিশেষ করে শাসকদলের একমাত্র প্রতিদ্ব›দ্বী বৃহৎ জনপ্রিয় দল বিএনপি’র উপর দোষ চাপিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের পূর্বের খেলা নতুন করে শুরু করে বিএনপিকে আতঙ্কের মধ্যে রাখার নীল নকশার অংশ হিসেবে এই ন্যাক্কারজনক হামলা করেছে। পুলিশ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে এ পর্যন্ত ২০ টি মামলা দিয়েছে, ১২ হাজারেরও বেশি জনকে আসামি করেছে এবং এ পর্যন্ত ১৮৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। এমনকি পঞ্চগড় থেকে অনেক দূরের উপজেলার নেতাকর্মীদেরকেও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আটক করেছে, অভিযান চালিয়ে হয়রানি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। বিএনপি ও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কেহ নিজ বাড়িতে থাকতে পারছেন না। প্রকৃত ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে পুলিশসহ সকলেই তা জানে, অথচ গ্রেফতার করা হচ্ছে নির্বিচারে বিএনপি নেতাকর্মীদের। পুলিশ ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। এতে বুঝা যায় পুলিশ এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে পূর্বের ন্যায় ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপিয়ে সারা দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা করে দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিএনপি’র ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টায় নেমেছে। কিন্তু জনগণ সবই বোঝে।

মহাসচিব জানান , পঞ্চগড় জেলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ঘরে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন ও স্থানীয়ভাবে তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার জন্য কে বা কারা দায়ী, প্রশাসনের ভূমিকা ইত্যাকার বিষয়ে একটি সার্বিক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এর নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সদস্যবৃন্দ গত ৮ মার্চ পঞ্চগড় সদর উপজেলার আহম্মদ নগর ও বোদা উপজেলার ফুলতলা, শাল সিঁড়ি ও বেংহারি বনগ্রাম ইউনিয়ন সহ সংশ্লিষ্ট ঘটনাস্থল এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়িসমূহ সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং আহমাদিয়া স¤প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক এবং আহতদের সাথে কথা বলেন। এসময় কমিটির অন্যান্য সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র এডভোকেট এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক সচিব মোঃ ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। কমিটির সদস্যবৃন্দ পরে পুলিশের গুলিতে নিহত আরিফুর রহমান এর বৃদ্ধ পিতা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে দেখা করে সমবেদনা প্রকাশ করেন। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে তাদের রিপোর্ট দাখিল করেছে।