র‌্যাব-১০র অভিযানে হাতিরঝিল থেকে নিষিদ্ধ মাদক “ম্যাজিক মাশরুম” ও বিদেশি মদসহ ২ জন গ্রেফতার

আপডেট: জুলাই ৭, ২০২১
0

১ । র‌্যাব-১০ এর অভিযানে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা হতে নিষিদ্ধ মাদক “ম্যাজিক মাশরুম” ও বিদেশি মদসহ ২ জন গ্রেফতার হয়েছে।

২। গ্রেফতকারকৃতরা হচ্ছে (১) নাগিব হাসান অর্নব (২৫), (২) তাইফুর রশিদ জাহিন (২৩)।

৩। আজ ৭ জুলাই রাত আনুমানিক পৌনে ২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা হতে (১) নাগিব হাসান অর্নব (২৫), (২) তাইফুর রশিদ জাহিন (২৩), পিতা-মনজুর রশিদ২ জন যুবক’কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক ম্যাজিক মাশরুম এর ০৫টি বারে ১২০টি স্লাইস এবং ০২ বোতল বিদেশী মদ। প্রতিটি বারে ম্যাজিক মাশরুম বা চংরষড়পুনরহ এর পরিমান ২৫০০ এমজি।

৪। ম্যাজিক মাশরুম একটি সাইকেলেডিক (হ্যালোসিনোজেন) ড্রাগ। এই ড্রাগটি বিভিন্ন খাবারে যেমনঃ কেক ও চকলেট মিক্স অবস্থায় সেবন করা হয়। এছাড়াও পাউডার ক্যাপসুল হিসেবেও পাওয়া যায়। এই ড্রাগ ব্যবহারে সেবনকারীর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। এমনকি কেউ কেউ ছাদ থেকে ঝাঁপিয়েও পড়তে পারে। ইহা সেবনে শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে মানসিক রোগ যেমন সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারন হতে পারে। এই ধরণের অপ্রচলিত ড্রাগের চাহিদা তৈরী হয় মাদক সেবীদের নতুনত্বের প্রতি আগ্রহের মাধ্যমে।

৫। গ্রেফতারকৃত তাইফুর রশিদ জাহিন প্রথমে গাজা ও মদ্যপানে আসক্ত ছিল। এরপর সে ২০১৯ সালে ক্রমান্বয়ে এলএসডি, ডিএমটিসহ বিভিন্ন ধরণের সাইকেডেলিক ড্রাগ নিয়মিত সেবন ও বিক্রি করা শুরু করে। সাইকেডেলিক ড্রাগ সম্পর্কে তার আগ্রহ সৃষ্টি হলে ইন্টারনেট থেকে সেই সাইকেডেলিক ড্রাগের উপরে অনুসন্ধান শুরু করে। এভাবে সে ম্যাজিক মাশরুম সর্ম্পকে অনলাইনে জানতে পারে।

৬। অতঃপর গ্রেফতারকৃত তাইফুর রশিদ জাহিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ জন্মানো বিভিন্ন মাশরুম এর মধ্যে সাইকেডেলিক বা ম্যাজিক মাশরুম আছে কিনা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে সে ব্যর্থ হওয়ার পর, ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ করতে শুরু করে। ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ পাওয়ার পর সে বিদেশে অবস্থানরত তার বন্ধু ও পরিচিত জনদেরকে ম্যাজিক মাশরুম বাংলাদেশে নিয়ে আসার অনুরোধ জানায়। কানাডায় অবস্থানরত তার বাল্যবন্ধু গ্রেফতারকৃত নাগিব হাসান অর্নব অধিক মুনাফা লাভের আশায় তাইফুর রশিদ জাহিনের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। তাইফুর নাগিবকে আরো জানায় যে, সে ম্যাজিক মাশরুমের বারগুলো বাংলাদেশে বিক্রির ব্যবস্থা করবে। গত মে ২০২১ মাসে গ্রেফতারকৃত নাগিব হাসান ম্যাজিক মাশরুমের একটি চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাইফুর ও নাগিব এই ম্যাজিক বারগুলি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। অত্যন্ত বিপদজনক এই ম্যাজিক মাশরুম সেবন করে তাইফুর নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং অত্যন্ত বিভৎসভাবে নিজেই নিজের হাতের বিভিন্ন অংশ ধারালো বস্তু দিয়ে কেটে ফেলে।

৭। গ্রেফতারকৃত নাগিব হাসান অর্নব বাংলাদেশে এসএসসি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছে। এ সময় গ্রেফতারকৃত তাইফুর রশিদ জাহিদ তার সহপাঠি ছিল। গ্রেফতারকৃত অর্নব পরবর্তীতে ২০১৪ সালে কানাডায় গমণ করে। বর্তমানে সে কানাডায় একটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন শেষে কর্মরত রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, গ্রেফতারকৃত তাইফুরের সাথে যোগসাজসে কানাডা হতে সে ম্যাজিক মাশরুম ক্রয় করে নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশে চড়া মূল্যে বিক্রি করে।