লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ কোটি দিনমজুরকে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা দেয়ার আহবান বিএনপির

আপডেট: এপ্রিল ২৪, ২০২১
0

বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন , ‘লকডাউনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ‘দিন আনে দিন খায়- এ শ্রেণীর গরিব দিনমজুর. পেশাজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের প্রত্যেককে এ পর্যায়ে অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রীয় বিশেষ তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৩ মাসের জন্য ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকা এককালীন নগদ অর্থ পৌঁছে দেয়া নিশ্চিত করতে হবে।

আজ দুপুরে র্ভাচ্যুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব সরকারের প্রতি এ আহবান জানান।

এ সময় মীর্জা ফখরুল বলেন, ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আলোকে প্রয়োজনে এ বরাদ্দ নবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া তথ্যানুযায়ী, দেশে মোট শ্রমশক্তি ছয় কোটি আট লাখ। এরমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে (শ্রম আইনের সুবিধা পান) কর্মরত জনশক্তি মাত্র ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। সবচেয়ে বড় অংশ ৮৫ দশমিক এক শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। এই হিসেবে দেশের পাঁচ কোটি মানুষ দিনমজুরের মতো কাজ করেন।

যাঁদের শ্রম আইন-২০০৬ প্রদত্ত নিয়োগপত্র, কর্মঘণ্টা, ঝুঁকিভাতা, চিকিৎসাভাতা, বাড়িভাড়াসহ বেশিরভাগ অধিকারই নিশ্চিত নয়। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত এ সকল শ্রমিকদের প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয় বিশেষ তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৩ মাসের জন্য ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকা এককালীন নগদ অর্থ প্রদান করতে হবে। এদেরক্ষেত্রেও ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আলোকে প্রয়োজনে এ বরাদ্দ নবায়ন করতে হবে।

নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা অর্থাৎ দারিদ্র্যের বর্তমান হার বিবেচনায় নিয়ে সমগ্র দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা সহায়তা প্যাকেজের আওতায় আনতে হবে।

গত বছরের অভিজ্ঞতা এবং দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিরপেক্ষভাবে দুঃস্থ উপকারভোগীদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। যাতে রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে প্রকৃত দুঃস্থ এই মানবিক প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত না হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত এসএমই, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প ও কৃষিখাতে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব তহবিল থেকে বিশেষ প্রণোদনা অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ বিবেচনায় না নিয়ে প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পোদ্যোক্তাকে এ ঋণ প্রণোদনা দেয়া নিশ্চিত করতে হবে। কোনোরকমেই এ ঋণ ব্যাংকের Depositor’s money নির্ভর ঋণ হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ প্রণোদনা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। ২০২০ সালের এপ্রিলে বিএনপি উপস্থাপিত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবাবলী সম্বলিত প্রণোদনা প্যাকেজকে যথাযথ মূল্যায়ন করে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

মনে রাখতে হবে আমরা পুরো জাতি আজ এক মহাসংকটের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করছি। এ মুহূর্তে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে আমাদের এ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। অন্যথা এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।