শুধু খালেদা জিয়া নয়, দেশের ১২ কোটি লোকের জন্মতারিখ ঠিক নেই — ডাঃ জাফরুল্লাহ

আপডেট: জুন ১৬, ২০২১
0

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন প্রসঙ্গ নিয়ে বক্তব্যকালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ ১৫ কোটি লোক আছেন, তার মধ্যে ১২ কোটি লোকের কোনও (সঠিক) জন্মতারিখ নেই। বিচারপতিদের কারোরই বয়সের ঠিক নেই। দুর্নীতি লুটপাটে ব্যস্ত সরকার জনগনের দৃষ্টি আড়াল করতে নতুন ইস্যু সৃষ্টি করছে।

বুধবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা কালো আইন বাতিল’-এর দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের কোন লোকের বয়স ঠিক আছে? কারোরই বয়স ঠিক নাই। আমাদের সময়ে বাপ-মায়েরা বয়স ঠিক করতেন না, বয়স ঠিক করতেন হেডমাস্টার। আমরা যারা উঁচু লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছি, আমাদের বয়স ঠিক করতেন হেডমাস্টার। আজকে সেখানে খালেদা জিয়ার বয়স নিয়ে একটা মামলা করেছে, এটা দেখে হাইকোর্টের বিচারপতির প্রথমেই বলা উচিত ছিল- এইসব ফালতু কিছু দেখার জন্য হাইকোর্টের সৃষ্টি হয় নাই।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য গণস্বাস্থের ট্রাষ্টি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তৈমুর আলম খন্দকার, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাধারন সম্পাদক কমরেড নুরুল ইসলাম, বিএনপির গণশিক্ষা সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, ডিইউজের সাধারন সস্পাদক শহিদুল ইসলাম, লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান হিন্দুরত্ন রামকৃষ্ণ সাহা, মুক্তিযোদ্ধা দলের যুগ্ম-মহাসচিব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, লেবার পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক হুমাউন কবির, আবদুর রহমান খোকন, ধর্ম সম্পাদক মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদী, যুব বিষয়ক সম্পাদক মোহিবুল্লাহ আল মাহদি, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মোঃ মিলন ও সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রদলের মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

ডাঃ জাফরুল্লাহ প্রশ্ন করেন, আপনারা এটা কী করছেন? বিএনপির এত বড় একটা পার্টি, তার নেত্রীকে আপনারা অপমান করছেন। আমি মনে করি, তাদের উচিত হবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সংসদ ভবনে যাওয়া এবং প্রধান বিচারপতিকে ঘেরাও করা। আজকে সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করা ছাড়া আমাদের কারও মুক্তি নাই। প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকার ছয় লাখ কোটি টাকার বাজেট করেছে। আমি একটা লেখা লিখেছি, অর্থমন্ত্রীর ভানুমতির খেলা। এই ছয় লাখ কোটি টাকার মধ্যে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা পাবেন জনপ্রশাসন অর্থাৎ আমলারা। অর্থাৎ আমলারা এক-পঞ্চমাংশ ভাগ পাবেন। বাজেটে সরকার তাদের খুশি করেছেন। এই আমলারা সরকারকে ক্ষমতায় এনেছেন, তাই তাদের খুশি রাখতে এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে আর সরকার দাঁড়িয়ে আছে ধারের (ঋণ) ওপরে। এই বছরের বাজেটে প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে সরকার।

সমাবেশে আন্দোলনের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে। আমাদের এক যোগে লড়াই করতে হবে। বড় বড় দলগুলোকে বলি, আপনারা যদি ভেবে থাকেন আগামী নির্বাচনটা দেখি, তাহলে ভুল হবে। কারণ উনি সাত-এর জায়গায় ৭০টা সিট দেবেন, কিন্তু ক্ষমতা দেবেন না। সুতরাং তাকে ক্ষমতা থেকে না নামিয়ে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না।

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-এর বিরুদ্ধে সারাদেশকে রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ একমাত্র জনগণই পারে এমন শাসক দলকে হটিয়ে দিতে। আগামীতে আমাদের এর ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

আদনানকে ফিরে পেতে ভিপি নুরের হুংকার দিয়ে ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, হামলা, মামলা, গ্রেফতার নির্যাতন ও গুম-খুন করে এই সরকার টিকে আছে। গুমকারীদের রক্ষা নেই ! এমপি-মন্ত্রী যারাই জড়িত তাদের একদিন বিচারের আওতায় আনা হবে। তিনি সরকার অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকার পতনের লক্ষে রাজনৈতিক শক্তি সমুহকে রাজপথে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডাঃ ইরান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাক স্বাধীনতা হরনের হাতিয়ার আর ১৬ জুন ১৯৭৫ সংবাদপত্রে ইতিহাসে একটি কলো অধ্যায়। সরকার বিরোধী মতকে দমন করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরী করছে। বিগত বছরগুলোতে এই আইনে নাগরিকরা সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন, গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। গণমাধ্যম-কর্মীরা ভয়ে সত্য প্রকাশ করতে পারছে না। তাই নিবর্তনমূলক ডিজিটাল বাক স্বাধীনতা হরনকারী আইনটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।