শ্রমজীবী মানুষের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে : এ টি এম মা’ছুম

আপডেট: জুলাই ৬, ২০২২
0

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুমিল্লা অঞ্চলের উদ্যোগে ষান্মাসিক সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা এ টি মা’ছুম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষদের মানবরচিত ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করে একদল মানুষ ও রাজনৈতিক দল নিজেদের ফায়দা হাসিল করে নিচ্ছে। অন্যদিকে পদে পদে শ্রমিকরা হচ্ছে নিপীড়িত-নির্যাতিত। আজ শ্রমিকদের সমাজ রাষ্ট্রে ন্যূনতম মর্যাদা নেই। তারা আজ সর্বহারা। শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির জন্য প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে মানুষ হিসেবে তাদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা।

তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুমিল্লা অঞ্চলের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ষান্মাসিক সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সভাপতিত্বে এবং ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও অঞ্চল সহকারী পরিচালক ড. সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আব্দুর রব, ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূইয়া। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের নোয়াখালী জেলা সভাপতি এডভোকেট জহিরুল আলম, কুমিল্লা মহানগরী সভাপতি কাজী নজির আহমদ, চাঁদপুর জেলা সভাপতি রহুল আমিন, লক্ষ্মীপুর জেলা সভাপতি মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, ফেনী জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কেফায়েত উল্লাহ ভূইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সভাপতি খাইরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা উত্তরের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা সভাপতি আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অঙ্গন ব্যাপক ও বিস্তৃত। শ্রমজীবী মানুষদের সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদী ধারায় পরিচালিত করে এক দল মানুষ শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদী মতবাদে বিশ্বাসী ব্যক্তিরা মনে করে শ্রমিকরা হচ্ছে যন্ত্র এবং তাদের স্বার্থে শ্রমিকদের যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে খাটানো যাবে। এই ধারণায় বিশ্বাসী তথাকথিত আধুনিক ও প্রাশ্চাত্য সভ্যতার মানুষরা প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের ওপর জুলুম ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরি করেছে। মানুষের মধ্যে শ্রেণিতাত্ত্বিক দেয়াল তুলে দিয়েছে। ধারাবাহিকভাবে চলা এই নীতিতে শ্রমিকরাও মনে করছে তাদের জন্ম হয়েছে শুধু মালিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য। তাদের এই জীবনে দু’বেলা দুমুঠো খেয়ে কোন ভাবে বাঁচতে পারলেই হলো। আর কোন চাহিদা তাদের নেই বা থাকতে পারে না।

এ টি এম মা’ছুম বলেন, মানুষকে আল্লাহ আশরাফুল মাখলুকাত করে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের মধ্যে কোন বিভাজন বা শ্রেণিভাগ করেননি। আল্লাহর কাছে মানুষের মর্যাদা নির্ধারিত হবে কর্মের ভিত্তিতে। সকল মানুষের জন্য আল্লাহর বিধান একই। আজকের দুনিয়ার সকল অশান্তির মূলে রয়েছে মানবরচিত মতবাদের সীমাবদ্ধতা। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর বিধান পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা করা। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ খেটে খাওয়া শ্রমিক। এই শ্রমিকদের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদ নামক মাকাল ফল ফেলে দিয়ে কুরআনের পথে ফিরে আসতে হবে। আমাদের দেশের শ্রমিকরা স্বল্প শিক্ষিত। তারা সত্য সুন্দরের পথের আলো থেকে বঞ্চিত। তাদের কাছে কুরআনের দাওয়াত ও সত্য সুন্দরের পথ তুলে ধরতে হবে। তাদেরকে দেখাতে হবে ইসলাম তাদের জন্য কী সুন্দর অনুপম নীতি প্রণয়ন করেছে। ইসলামী শ্রমনীতি যদি শ্রমিকদের সামনে পেশ করা যায় তাহলে আশা করা যায় দেশের একজন শ্রমিকও আর ভ্রান্তনীতির পক্ষে নিজেদেরকে ধাবিত করবে না। তারা সকলেই ইসলামী শ্রমনীতির পতাকাতলে নিজেদেরকে শামিল করবে।