সরকারি জমি দখলে থমকে আছে কোটি কোটি টাকার উন্ময়ণ প্রকল্পের কাজ

আপডেট: মে ৩১, ২০২১
0

বিপ্লব বিশ্বাস

[সরকারি খাস জমি দখল করে তিনশতাধিক ঘর তৈরি করে ভাড়া উঠাচ্ছেন এক সরকারি দলের নেতা। বছরের পর বছর অবৈধ্য সুবিধা নিলেও প্রতিবারই পার পেয়ে যাচ্ছেন আওয়ামীলীগ দলের ওই নেতা।

জানা যায়, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মুখভাগ থেকে নাজিরপুর কলেজ পর্যন্ত পাকা সড়ক, ওয়াক ওয়ে, ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মুখভাগ থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত প্রায় ৩ শ’ মিটার লম্বা এবং ১শ’ মিটার চওড়া সরকারি খাস জমিতে উপজেলা ওই আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন খান শতাধিক অবৈধ স্থাপনায় চলমান এ উন্নয়ন প্রকল্পটি থমকে আছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন ওই আ.লীগ নেতাকে তার অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বারবার তাগাদা দিলেও এখন পর্যন্ত তিনি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি।
নাজিরপুর উপজেলায় প্রবেশদ্বারের মুখে অবৈধ স্থাপনার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়ি ঢুকতে প্রতিয়ত হচ্ছে বাধার সম্মূখিন।


এ ব্যাপারে নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া বলেন, উপজেলা সদরের দৃশ্যমান সুন্দর্যবর্ধক প্রকল্প হিসেবে নাজিরপুর উপজেলা হেডকোয়াটার থেকে হুমায়ুন হাজরার বাড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তবে সড়কটি শুরু স্থান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে নদীর তীর পর্যন্ত প্রায় তিনশ’ মিটার লম্বা ও ১শ’ মিটার চওড়া সরকারি খাস জমিটি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দখল করে অবৈধ স্থাপনা করে রেখেছে। সেগুলো অপসারণ না করায় ডিজাইন অনুযায়ি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রকল্পের অন্য অংশের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, যারা ওই জায়গা দখল করে আছে। তাদের ইতোমধ্যে নোটিশ করা হয়েছে এবং উচ্ছেদ মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন দখলকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান সেই প্রভাবে তিনি নোটিশ পেয়ে তার অবৈধ স্থাপনা সরিয়েনিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আপনার মত শুনেছি তিনি ওই জায়গা দখল করে রেখেছেন। কিন্তু আমি সেখানে গিয়ে কখনো তাকে পাইনি। যারা রয়েছেন তারাও নিজেদের ভাড়াটিয়া দাবি করছেন। তবে সরকারি সম্পত্তি যেই অবৈধভাবে দখল করে রাখুক, আমরা যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় তা উচ্ছেদের ব্যবস্থা করবো এবং তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, ওই জায়গাটি সরকারি খাস জমি। কে দখল করে মার্কেট করেছেন বা ভাড়া দিয়েছেন সেটা বড় বিষয় নয়। যারা বর্তমানে দখলে রয়েছেন তারাই অবৈধ দখলদার।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন খান বলেন, ওই সম্পত্তি আমার ক্রয়করা সম্পত্তি ছিল। এক পর্যায়ে সরকার অধিগ্রহন করে নিলে আমি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলায় আমি হেরে গিয়ে একসনা লিজ নিয়ে ভোগ দখলে আছি। সরকার নুতন করে লিজ না দেয়ায় নবায়ন করা সম্ভব হয়নি। উন্ময়ন কতৃপক্ষ আমাকে যতটুকু ছেড়ে দিতে বলবো আমি ছেড়ে দিব।