গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ‘সরকারের দুর্নীতি’র কারণেই বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ গ্যাসের দাম বাড়ছে কেনো আসলে? গ্যাসের দাম বাড়লো সম্পূর্ণভাবে তাদের দুর্নীতির কারণে।এক হচ্ছে তাদের ম্যানেজমেন্টট, তাদের অযোগ্যতা- এটা তাদের ব্যর্থতা।”
‘‘দুই হচ্ছে গ্যাস তো এখন বিভিন্নভাবে আমদানি করা হচ্ছে। সেখানে তাদের লোকেরাই জড়িত আছে। যেহেতু বিভিন্ন প্রকার গ্যাস তারা আমদানি করছে, বিক্রি করছে। এটাকে মোটামুটি স্টেবল রেখে তাদের মার্কেট যেন ঠিক থাকে। আর সরকারিভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়ে জনগনের সাধারণের পকেট কেটে নিয়ে যাচ্ছে।”
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দা্বি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমরা কালকেও বলছি, কে কার কথা শোনে। আজকে আবার বলছি, গ্যাসের দাম আগের জায়গায় ফিরে যেতে হবে।”
‘‘ প্রত্যেকটি ইউটিলিটি সার্ভিস আছে পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্য জনগনের সহনশীলতার মধ্যে রাখার জন্য আমরা আবেদন জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন(বিইআরসি) পাইপলাইনে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের পাইকারি দাম ৯টা ৭০ পয়সা থেকে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা করেছে, যা চলতি জুন মাস থেকেই কার্য্কর হবে।
খুচরা পর্যায়ে সেই মূ্ল্য সমন্বয় করে যানবাহনে ব্যবহারের সিএনজি বাদে সব পর্যায়েই গ্যাসের জন্য খরচ বাড়বে।
রান্নার গ্যাসের জন্য দুই চুলার মাসিক বিল ৯৭৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৮০ টাকা।এক চুলার মাসিক বিল ৯২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯০ টাকা করা হয়েছে।
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে শিল্প-কলকারখানায় উতপাদিত প্রত্যেকটা পণ্যের মূল্য আবার বাড়বে। এই যে বাড়বে পারসেনটেইজ আকারে বাড়ছে।”
‘‘ এমনিতে একটা মূল্যস্ফীতি নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে মানুষ। আমরা শুধু নয়, সকল অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, এটা একটা মেজর ক্রাইসিস।এটা যদি না হেন্ডেল না করা যায় তাহলে আমাদের সামনে সমূহবিপদ। প্রায় সব অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এরমধ্যে সিপিডিও বলেছে। তারপরেও সেই অবস্থা চিন্তা করলো না তারা। তারা আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিলো।”
তিনি বলেন, ‘‘ প্রতিদিন মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। একজন রিকশাওয়ালার একটা বনরুটি খেতে ১৫ টাকা লাগে। তার সাথে এক কাপ চা। তার মানে তার মিনিমাম ২৫ টাকা লাগে একটা খাদ্যদ্রব্যের জন্য। এটা তারা(সরকার) বুঝতে চান না।”
‘‘ তারা( সরকার) শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বাস করে, ১৫ বছরের ক্ষমতায় থাকার যে একটা আনন্দ-সুখ, সেটাকে তারা সুখময় জীবন-যাপন করছেন। সাধারণ মানুষের যে কষ্ট তা তারা বুঝতে চান না। আমি তো বলি, তারা আসুক এই দুপুরে রোদ্রের মধ্যে সাধারণ মানুষের সাথে গাছের তলায় গিয়ে দোকানে চা খায়, বনরুটি নেয় তখন কী অবস্থা দাঁড়ায় দেখুক। কিন্তু তাদের মনে তা যাবে না। কারণ জনগন থেকে তারা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তারা জনগনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগের চরিত্রটা যখন তারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে তখন কিন্তু চরিত্র ছিলো । এখন তারা একটা শোষকের দলে পরিণত হয়েছে। এখন তাদের শোষিতের পক্ষে কথা বলার সুযোগ নাই। কারণ তারা বাংলাদেশকে শোষন করছে।”