সরকার বন্যার্তদের জন্য কী করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন মীর্জা ফখরুলের

আপডেট: জুন ২৩, ২০২২
0

সরকার বন্যার্তদের জন্য কী করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন বিএনপি মহাসচিব্ এই প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, ‘‘ প্রধানমন্ত্রী কালকে সিলেটে গিয়েছেন। ভালো কথা। তিনি মিটিং করেছে। সেখানে তিনি সিলেটের মেয়র আরিফ সাহেবকে (আরিফুল হক চৌধুরী) বলেছেন, কোথায় তোমাদের বিএনপি.. কত দিয়েছে তোমাকে।”

‘‘ বিএনপির তো দায়িত্ব না এটা। এই বন্যা পরিস্থিতি দেখভাল করার সমস্ত দায়িত্ব সরকারের। যখন তিনি এই কথা বলেন। তখন তার(প্রধানমন্ত্রী) তো নিজের দিকেও একটু তাঁকানো দরকার যে, তারা কি করছে এখন পর্যন্ত? কত দিচ্ছেন বরাদ্ধ? আজকে একটা পত্রিকায় আছে ৩০ লাখ মানুষের জন্য ৬০ লাখ বরাদ্ধ।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আপনারা(সাংবাদিক) নিশ্চয় দেখেছেন যে, পুরো সুনামগঞ্জ জেলা পানির তলে। সিলেট শহরের একটু অংশ বাদ দিয়ে পুরো সিলেট জেলা পানির তলে। সেখানে তারা মাত্র ৬০ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে।”

‘‘ আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যে, জনগনের এই চর, দুরাবস্থার মধ্যে জনগনের পাশে না দাঁড়িয়ে আবারো প্রমাণ করলেন যে, আওয়ামী লীগ আসলে জনগনের কল্যাণের জন্য কোনো দল নয়, জনগনকে প্রতারিত করে ক্ষমতায় টিকে থাকাটাই হচ্ছে তাদের একমাত্র লক্ষ্য এবং সেটা মিথ্যাচার করে, শুধু মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।”

তিনি বলেন, ‘‘ প্রধানমন্ত্রী কালকে সিলেটে গেছেন। হেলিকপ্টারে করে দেখেছেন -খুব ভালো কথা। সার্কিট হাউজে গেছেন, মিটিং করেছেন।”

‘‘ কিন্তু একটু এগিয়ে গিয়ে বন্যার্তদের মাঝে যান নাই। বন্যার্তদের যে একুট সাহস জাগাবেন-এটাও তিনি করেননি। উপরুন্ত তিনি সিলেটের মেয়র আরিফ সাহেবকে বলেছেন কোথা তোমাদের বিএনপি, কত দিয়েছে তোমাকে..।”

বিএনপির ত্রাণ কার্য্ক্রম সম্পর্কে মহাসচিব বলেন, ‘‘ বিএনপি বন্যা শুরুর পর থেকে গত তিনদিন আগে থেকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের কাজ শুরু করেছে। বিএনপি ১০ হাজার, ২০ হাজার টাকায় নৌকা ভাড়া করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে যারা পানিতে আটকা পড়েছিলো তাদের উদ্ধার করেছে এবং ত্রাণ দিয়েছে। আজকেও করেছে, প্রতিদিন তারা(বিএনপি) ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছে।”

‘বিএনপির নেতা খালেদা জিয়া’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকের প্রধানমন্ত্রী তার প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, বিএনপির তো নেতাই না্, বিএনপির প্রধানমন্ত্রী কে হবেন।”

‘‘ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে হলে আমাদের জবাব খুব পরিস্কার, আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের নেতা। তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, তিনি আগামীতে প্রধানমন্ত্রী হবেন। তার অনুপস্থিতিতে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব প্রধানমন্ত্রী হবেন। এখানে আমাদের দলে নেতৃত্বের কোনো সমস্যা নেই। এটা পুরোপুরিভাবে নির্ধারিত। বিএনপিতে কোনো নেতৃত্বের সংকট নেই। এটা সরকার প্রচার করছে বিভিন্নভাবে মানুষকে প্রতারিত করবার চেষ্টা করছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ বরং উনাদের সংকট আছে। একমাত্র হাসিনা ছাড়া তো তাদের কেউ নেই। ইজ এ এ্যানি ওয়ান নেতৃত্ব দিতে পারে। তাদের সংকট তো বেশি। উনি চলে গেলে কে হবেন? তা নিয়ে কী যুদ্ধ হয় সেটা তারাই বলতে পারবেন।”

‘তারেক বিদেশী নাগরিকত্ব নেননি’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ তারেক রহমান বিদেশী নাগরিকত্ব নিয়েছেন-এটা একেবারেই মিথ্যা কথা। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব যুক্তরাজ্যে এসাইলামে আছেন। এটা খুব পরিস্কার করে বলা হয়েছে, এটাতে কোনো রাগ-ঢাক নেই। তিনি কোনো নাগরিকত্ব চানওনি, বৃটেনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেননি।”

‘‘ তিনি আছেন যুক্তরাজ্যে, এসাইলামে আছেন। এসাইলাম ছাড়া তো উপায় নেই। কারণ এরা(সরকার) রিনিউ করে না পাসপোর্ট। সুতরাং এই সমস্ত মিথ্যা কথা বলে মানুষজনকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। বাজে কথা বলার তো যুক্তি নাই।”

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তার সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করায় সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

বন্যা পরিস্থিতির জন্য সংগঠনের কাজ সীমিত করে নেতা-কর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের য়ী কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব।

অবিলম্বে বন্যা উপদ্রুত অঞ্চলকে দূর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।