সরকার যা বলবে, এমপিরা সেটি পাশ করে দেবে : তাহলে সংসদে যাওয়ার মানে হয় না—- সাবের হোসেন চৌধুরী

আপডেট: জুন ১৩, ২০২১
0

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বাস্তবে বাজেট নিয়ে বাংলাদেশের সংসদে খুব বেশি আলোচনা হয় না। এর আগে বিষয়টি সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হতো। তিনি বলেন, আবুল মাল আবদুল মুহিত যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি সংসদীয় কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে আসতেন। এরপর আমাদের আলোচনাগুলো তিনি নিজে নোট নিতেন। কিন্তু এবার সেটিও হয়নি। অর্থাৎ বাজেটের বিষয়টি কোনো কমিটিতেই আলোচনায় আসেনি।

সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, যদি এভাবে হয়, সরকার যা বলবে, এমপিরা সেটি পাশ করে দেবে, তাহলে সংসদে যাওয়ার মানে হয় না। তিনি বলেন, নীতির ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি আছে। জনস্বাস্থ্য খাতকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না।

বাজেট নিয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ভার্চুয়াল সংলাপে শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, পরিসংখ্যান নিয়ে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে। এটি সঠিক। কারণ বাজেটে আমরা এক ধরনের পরিসংখ্যান দেখছি। আবার এখানে এসে দেখছি ভিন্ন চিত্র। বিবিএস এবং বিআইডিএস ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান ব্যবহার করছে। কিন্তু ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান দিয়ে ২০২১ সাল চলবে না। এজন্য দুটি সংস্থার দক্ষতা বাড়িয়ে পরিসংখ্যান হালনাগাদ করতে হবে। কারণ হলো পরিসংখ্যান সঠিক না হলে সিদ্ধান্তও সঠিক হবে না। পরিসংখ্যানই আমাদের আলোচনার ভিত্তি ঠিক করে দেবে।

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, বাজেট নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয় না। এটি দুঃখজনক। বাজেট কতটুকু বাস্তবায়ন হলো, এর গুণগত মান নিয়ে সঠিক মূল্যায়ন নেই। বাজেট বাস্তবায়নে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে টাস্কফোর্স হতে পারে। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তারা কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে পরিসংখ্যানের স্বচ্ছতা নেই। বাজেট বক্তৃতায় যেসব পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তার বেশির ভাগ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ২০১৬ সালে যে তথ্য দিয়েছে, সেটি ব্যবহার করা হয়েছে। করোনায় দরিদ্র পরিস্থিতি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতি নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যেসব তথ্য প্রকাশ করেছে, অর্থমন্ত্রী তার স্বীকৃতিই দেননি। এ ছাড়া অন্যান্য বছর বাজেট নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়। কিন্তু এবার সেটিও হয়নি।

এছাড়াও আলোচনায় যেসব বিষয় উঠে আসে, তা হলো রাজস্বনীতি ও প্রশাসন আলাদাকরণ, টিকার জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকা এবং ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।