সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরণে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের গভীর উদ্বেগ

আপডেট: মার্চ ৮, ২০২৩
0

রাজধানীর গুলিস্তানের নর্থ সাউথ রোডের সিদ্দিকবাজারে পাশাপাশি দুটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম-এসএনএফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সাথে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহŸবান জানাচ্ছে সংগঠন।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার (০৭ মার্চ, ২০২৩) ঢাকার গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবনে বিকেল পৌনে পাচঁটার দিকে বিষ্ফোরণের ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট এখনো তাদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ১৮ এবং আহত শতাধিক। এ ঘটনায় আহত ও নিহতের অনেকেই শ্রমজীবী মানুষ।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ মার্চ ২০২৩ রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়। গত ৪ মার্চ ২০২৩ শনিবার বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডের কদম রসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়। ২০ এপ্রিল ২০২১, আরমানিটোলার ৯/১১ নম্বর আর্মানিয়ান স্ট্রিট হোল্ডিংয়ের হাজী মুসা ম্যানশন নামে ভবনটির নিচতলায় ছিল রাসায়নিক দ্রব্যের দোকান ও গুদামে আগুন লাগার ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মী’সহ পাঁচজন নিহত এবং ২২ জন আহত হন। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রæয়ারি মধ্যরাতে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারায় ৭১ জন। এছাড়া ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীর নবাব কাটরায় রাসায়নিকের গুদামে লাগা আগুনে ১২৪ জন মানুষ পুড়ে অঙ্গার হন।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম মনে করছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন (২০০৬) অনুযায়ী নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও যথাযথ সুরক্ষা যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা না রাখা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে একের পর এক এ ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে চলেছে। ফোরাম উপরোক্ত সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছে। একই সাথে আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়াসহ নিহত ও আহত শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানদন্ড (লস অফ ইয়ার আর্নিং) অনুসরণ করে ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছে।

ফোরাম লক্ষ্য করছে যে যত্রতত্র অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, কারখানা গড়ে তোলা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাব বা অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে বারবার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ইতোপূর্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশসমুহ বাস্তবায়নের জন্য আহŸবান জানায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।