সুপ্রিম কোর্টের প্রবীনতম আইন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি টি এইচ খান আর নেই

আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২
0

সুপ্রিম কোর্টের প্রবীনতম আইন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি টি এইচ খান আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ১০২ বছর।
পৌনে ৫টায় স্পেশাললাইজড হাসপাতালে চিকিতসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তার বড় ছেলে অ্যাডভোকেট আফজাল এইচ খান।
তিনি বলেন, ‘‘ বাবা বার্ধক্যজনিত কারণে হাট ফেলিউর করলে বিকালে মারা যান। গতকাল রাতে দূর্বলতার কারণে তাকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।”
মৃত্যুকালে বিচারপতি টিএইচ খান তিন ছেলে এক কণ্যা রেখে গেছেন। ২০১১ সালে তার স্ত্রী বেগম রওশন আরা জোবায়দা খানম মারা যান।

বড় ছেলে আফজাল এইচ খান সাংবাদিক ছিলেন। বর্তমান তিনি আইনপেশায় নিয়োজিত সাবেক সাংসদও ছিলেন। ফয়সল এইচ খানও আইনজীবী এবং ফজলে এলাহী খান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। একমাত্র মেয়ে ডা. ফাতেমা মাহমুদা খান হলি চিকিতসক।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য জীবনের শেষ সায়েহ্নে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি টিএইচ খান।

পরিবারের সদস্যরা জানান, মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা সাড়ে ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে হবে। এরপর তাকে মরদেহ নিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে পৈত্রিক বাড়ী হালুয়াঘাটের ঔটি গ্রামে। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হবে।
বিচারপতি টিএইচ খানের জন্ম ১৯২০ সালের ২১ অক্টোবর।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে ১৯৮৭ সালে আইন পেশায় যোগ দেন।
একই বছরে ২৭ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সালেহ আকরামের নেতৃত্বে যে পাঁচজন বিচারপতি নিয়ে ঢাকা হাইকোর্টের যাত্রা শুরু হয়েছিলো তিনি ওই সময় থেকে একজন আইনজীবী হিসেবে হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।
আইনজীবীদের কাছে টিএচ খান হিসেবে সমধিক পরিচিত। তার পুরো নাম হচ্ছে মো. তোফাজ্জল হোসেন খান।

১৯৬৮ সালে টিএইচ খান পূর্ব পাকিস্তানের হাইকোর্টের বিচারপতি হিসে্বে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে অবসর নিয়ে পুনরায় আইনপেশায় যোগ দেন।
১৯৭৪ ও ১৯৭৯ সালে দুই দফা তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। বিএনপির সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন তিনি।
জিয়াউর রহমানে প্রতিষ্ঠিত বিএনপিতে যোগদানের পরপরই ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে টিএইচ খান ধানের শীষের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মন্ত্রিসভায় আইন, শিক্ষা, ধর্মসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এরশাদের শাসনামালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় এই আইনজীবীকে কারাগারেও যেতে হয়েছে।

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী টিএইচ খান আইন পেশা ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ কলেজ ও পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে অধ্যাপনাও করেছেন।
বিচারপতি টিএইচ খান এশিয়া জোন থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রুয়ান্ডা ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি নির্বাচিত হন। তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস কমিশনের সদস্যও ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক পৃথক বিবৃতি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।