সেনাবহিনীর অভিযানে মিয়ানমারে গ্রাম ছাড়ছে হাজার হাজার মানুষ

আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২১
0

সেনাবহিনীর অভিযানে মিয়ানমারে গ্রাম ছাড়ছে হাজার হাজার মানুষ । রোববার থেকে রাজ্যের কানি উপশহর এলাকায় ঘরে ঘরে তল্লাশি ও হামলা শুরু করেছে তারা। সেনা অভিযানে নতুন করে আরও দুই নাগরিক নিহত হয়েছে।

গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। তবে গ্রামের কিছু সাহসী তরুণ-যুবা সেনা-পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। গ্রামবাসীর সমন্বিত হামলায় অন্তত ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে। এদিকে দায়িত্ব পালনকালে একজন জাপানি সাংবাদিককে আটক করেছে জান্তাবাহিনী।

সোমবার এসব খবর জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইরাবতী। মিয়ানমার পরিস্থিতি আলোচনার লক্ষ্যে আগামী ২৪ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের একটি জরুরি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

আসন্ন এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন মিয়ানমার সামরিক জান্তাপ্রধান মিন আং হ্লাইং। থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সম্মেলনে নিজেদের প্রতিনিধিত্বের দাবি জানিয়েছে সু চির সদ্য গঠিত ঐকমত্যের সরকারও।

গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন দেশটির সেনাবাহিনী। তার পর থেকে সেখানে অভ্যুত্থানবিরোধী টানা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৭২৮ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবারও মোগোক শহরে নিরাপত্তা বাহিনী ২ বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করে বলে রয়টার্সকে জানান এক প্রত্যক্ষদর্শী।

আন্দোলন দমনের কৌশল হিসাবে রোববার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে কারাগারে বন্দি নির্যাতিত বিক্ষোভকারীদের ছবি প্রকাশ করেছে জান্তারা। নির্যাতনে রক্তাক্ত নাক-মুখের ছবি দেখে ক্ষোভে ফুঁসছে অভ্যুত্থানবিরোধীরা। প্রতিবাদে জান্তার ওপর আশু পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় অধিকারকর্মীরা।

দ্য ইরাবতী জানায়, সাগাইং রাজ্যের চাংমা এলাকায় সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিক্ষোভকারীদের প্রতিরোধ বেড়ে যাওয়ায় সেনাদের বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামের পর গ্রাম। কানি থেকে ২০ কিলোমিটার ভেতরে চাংমার ছয়টি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে ১৫টি সেনাগাড়ি। খবর পেয়ে সেসব গ্রাম থেকে হাজার হাজার বাসিন্দা পালিয়ে যাচ্ছে অন্যত্র। কানির একজন প্রত্যক্ষদর্শী ইরাবতীকে জানিয়েছেন মনওয়া-কালেওয়া মহাসড়কে একজনকে গুলি করে মেরেছে সেনারা। আরেকজনকে তারা ধরে নিয়ে মারধর করেছে, পরদিনই তারও মৃত্যু হয়।

রোববার একজন জাপানি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিককে ইয়াঙ্গুন থেকে আটক করেছে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী। সোমবার মিয়ানমারের জাপানি দূতাবাস এ খবর নিশ্চিত করেছে। টোকিওভিত্তিক নিক্কেই বিজনেস ডেইলি পত্রিকার সাবেক কর্মী ইউকি কিতাজুমিকে রোববার ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।