সৈয়দপুরে জলাশয় দখল ও বিষ দিয়ে মাছ নিধনের বিচার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সংবাদ সম্মেলন

আপডেট: জুলাই ১১, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে জলাশয় জবর দখল ও বিষ দিয়ে মাছ নিধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে একটি হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শনিবার ১০ জুলাই বিকালে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কয়ামিস্ত্রী পাড়ায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সূর্যমুখী তরুন সংঘ সাবজনীন দূগাপুজা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র রায়। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি শুশান্ত চন্দ্র রায়, সুমন চন্দ্র, বিল্বব চন্দ্র, ডালিম চন্দ্র ও তাপস চন্দ্র রায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় একই এলাকার কার্তিক চন্দ্র সরকারী দলের প্রভাব দেখিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। মন্দিরের নামে জলাশয় দখল এবং বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ ও দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কায়দায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে আসছে।

এরই সূত্র ধরে শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল
সাড়ে ১১টায় বোতলাগাড়ি কয়ামিস্ত্রী পাড়ায়
(হিন্দু পাড়ায়) অবস্থিত সংগঠনের (মন্দিরের) জলাশয়ে সংগঠনের সভাপতিসহ কয়েকজন মিলে ১৬০ কেজি মাছের পোনা জলাশয়ে ছেড়ে দেন এবং জলাশয়ে সাইন বোর্ড লাগান।

এ সময় কার্তিক চন্দ্র তার ৩ ছেলে নিপু, কনক, নিম ও ভাড়াটে বাহিনী বাধা সৃষ্টি করেন এবং কমিটির লোকজনকে মার ডাং শুরু করেন। এতে কমিটির ৩ জন গুরুতরভাবে আহত হন। তাদের সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ।

কমিটির লোকজন হাসপাতালে ব্যস্ত থাকার সুযোগে রাতে কার্তিক তার লোকজন নিয়ে জলাশয়ে বিষ ও গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ নিধন করেন। অথচ ওই জলাশয়ের আয় থেকেই প্রতি বছর দুর্গা পুজা উদযাপন এবং মন্দিরের কাজে ব্যবহার করা হয় ।

সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এছাড়া কার্তিক চন্দ্র নিজেকে সভাপতি পরিচয় দিয়ে ভুয়া রশিদ তৈরী করে মন্দির ও পুজার নামে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আত্মসাৎ করে আসছেন।

তারা আরও বলেন, জলাশয়টি বাংলাদেশ রেলওয়ের। ০৫/০১/১৯৮৫ ইং তারিখে জলাশয়টি বর্তমান সভাপতি শ্রী শুশান্ত কুমার রায়ের পিতা উমেশ চন্দ্র রায়ের নামে লীজ করার জন্য এলাকাবাসী টাকা দেন। কিন্তু উমেশ চন্দ্র রায়ের নামে লীজ না করে কার্তিক চন্দ্র তার পিতা ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের নামে লীজ করেন।

পরে গত ১৬/০২/৯৪ ইং সনে কার্তিকের পিতা ঈশ্বর চন্দ্র রায় সাংসারিক সমস্যার কারণে জলাশয়টি নয়মুল চৌধুরীর কাছে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। পরে নয়মুল চৌধুরী ধর্মীয় বিষয়টি বুঝতে পেরে ১০/১০/০৮ ইং সনে হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনের কাছে লিখিতভাবে জলাশয়টি বিনামূল্যে ফেরত দেন।

ফেরতের সময় বোতলাগাড়ি ইউপি’র তৎকালীন চেয়ারম্যান মরহুম ছাইদুর রহমান সরকার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন । ওই সময় থেকে জলাশয়ের আয় দিয়ে শারদীয় দুর্গােৎসব পালন করে আসছে সূর্যমুখী তরুন সংঘ সাবজনীন দূগাপুজা কমিটি।

এরপর কার্তিক চন্দ্র জলাশয়টি কমিটির কাছ থেকে প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকা হিসাবে ইজারা নেন। ২ বছর টাকাও পরিশোধ করেন। ২০১৮ সাল থেকে ইজারার টাকা বাকী রাখেন। পরে কার্তিক জানিয়ে দেয় যে আর টাকা দিব না। এতেই শুরু দু্’পক্ষের মধ্যে ঝগড়া।

এভাবে প্রতারণা ও গায়ের জোরে একের পর এক অপকর্ম করেও রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে পার পেয়ে যায়। এবারও পূর্বের মত ঘটনার পর কার্তিক চন্দ্র উল্টো কমিটির লোকদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য থানায় দৌড়ঝাপ শুরু করেছে বলে অভিযোগ করে কমিটির লোকজন প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার আশা করেছেন।