সোনারগাঁয়ে আ’লীগ-জাপা বিরোধে বেসামাল এমপি খোকা

আপডেট: এপ্রিল ২২, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল কান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হচ্ছেন জাপা নেতা কর্মীরা। একে একে বেশ কয়েকজন জাপা নেতাকর্মী গ্রেফতার হলেও তাদের রক্ষা করতে পারছেন না এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। ফলে ক্রমশই বেসামাল হয়ে পড়েছে সোনারগাঁয়ে এমপি খোকার রাজনৈতিক অঙ্গন। এ ঘটনায় সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। ক্রমশই উত্তেজনার তপ্ত পারদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়ছে এ দু’দলের মধ্যে অবিশ^াস। ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে জাপা ও আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ- এমনটাই জানিয়েছে সোনারগাঁয়ের একাধিক সূত্র।

এদিকে গত দু’টি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা মামুনুল ইস্যুতে জাতীয় পার্টির এমপি খোকার রাজনৈতিক বলয় ভেঙ্গে দিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ আওয়ামীলীগ নেতারা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন জাপা নেতা কর্মীকে মামুনুল কান্ডে আসামী করে রাজনৈকিত কুট চালের প্রথম অধ্যায় সম্পন্ন করেছেন। গ্রেফতার করাতেও তারা সক্ষম হয়েছেন। বাড়ি ঘর ছাড়া করতে পেরেছেন জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মীকে।

অপরদিকে জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা নিজ দলের নেতাকর্মীকে রক্ষায় চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীর অভিযোগ ঘটনার সময় এমপি খোকার সঙ্গে তারা একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন। বিকাল থেকে তারা কয়েকটি অনুষ্ঠানে ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালে রাত ৮টার দিকে টেলিফোনের মাধ্যম থেকে তারা সংঘর্ষের খবর পান। তখনও এমপি খোকার সঙ্গেই অনুষ্ঠানে ছিলেন তারা। সেক্ষেত্রে তাদের এ মামলাগুলোতে আসামী করা হলো সেখানে এমপি খোকার কি কোন দায়িত্ব ছিল না?। যেখানে তিনি নিজেই একজন স্বাক্ষী ঘটনার সময় তারা কোথায় ছিলেন?

এসকল নেতা কর্মীরা বলছেন, কোন দূর্বলতার কারণে এমপি খোকা তাদের আশ্রয় দিতে পারেননি। ইতোমধ্যে এমপি খোকার প্রতি স্থানীয় জাতীয় পার্টির ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে।
জাপার একাধিক নেতাকর্মীরা বলছেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে লড়াই করেই রাজনীতি করে এসেছি। এমপি খোকার ব্যর্থতার কারণে আমরা মুখে কুলুপ এটে থাকবো না। প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান গ্রহন করবো।

সরকারের একটি অংশ হয়েও আমরা হেফাজতের মামলা খাব এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া হবে না। স্থানীয় আওয়ামীলী নেতাদের কুট চাল ভাঙ্গতে তারাও প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে তাদের নেতা এমপি খোকার অনুরোধে এখনও তারা ধৈয্য ধরে রয়েছেন। এ ধৈয্য তারা বেশিক্ষন ধরে রাখতে পারবেন না। প্রয়োজনে তারাও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাদের শায়েস্তা করতে মাঠে নামতে প্র¯ূÍত রয়েছেন। সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টিকে এত দূর্বল ভাবার কোন কারণ নেই। পাশাপাশি সরকারসহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের অহেতুক মিথ্যা অভিযোগে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

ওদিকে এ ব্যাপারে এমপি খোকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করে বলেন, যে সকল নেতারা ঘটনার সময় তার সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন তাদেরও আসামী করা হয়েছে। বিষয়টি আমি সরকারের উর্ধতন কতৃপক্ষ ও জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের জানিয়েছি। আমার নেতাকর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে এটা সত্য। তবে তাদের আমি বলেছি বিষয়টি আমি দেখছি। কথা বলছি। বিনা কারণে যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হয় সেটার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাবে। সরকারী দলের অংশিদার হয়ে এর বেশী কিছু আমি বলতে পারছি না আপাতত।
সাথে ছবি আছে।