স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো সম্পূর্ণ অনিয়মের মডেল হয়েছে — ইসি মাহবুব তালুকদার

আপডেট: মার্চ ২, ২০২১
0

স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে সামান্যতম ভারসাম্যও রক্ষা হয়নি। তৃতীয় জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “এ কথা ধ্রুব সত্য যে, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রে উত্তরণের একমাত্র পথ। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশীদারমূলক ও গ্রহণযোগ্য না হলে ক্ষমতার হস্তান্তর স্বাভাবিক হতে পারে না। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য না হলে দেশের স্থিতিশীলতা, সামাজিক অস্থিরতা ও ব্যক্তির নৈরাশ্য বৃদ্ধি পায়।

এর ফলে নৈরাশ্য থেকে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে। নৈরাজ্য প্রবণতা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্য মোটেই কাম্য নয়। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আশা-আকাঙ্ক্ষা রূপদানের জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর সাংবিধানিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে না পারলে আমরা গণতন্ত্র অস্তাচলে পাঠানোর দায়ে অভিযুক্ত হবো। বর্তমানে আমরা দেশব্যাপী পৌরসভা নির্বাচনের প্রায় শেষ পর্যায়ে আছি।

আগামী এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় নির্বাচনগুলোর গতিপ্রকৃতি দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও ভারসাম্য রক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা হচ্ছে না।

এক কেন্দ্রীয় নির্বাচনে স্থানীয় নির্বাচনের তেমন গুরুত্ব নেই, নির্বাচনে মনোনয়ন লাভই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নির্বাচনেও হানাহানি, মারামারি, কেন্দ্র দখল, ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি মিলে এখন একটা অনিয়মের মডেল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা হলেও অসংখ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা দুর্ঘটনা মিলে এক ধরনের অবিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়, যা নির্বাচনের অনুষঙ্গ হিসেবে রূপ লাভ করে।”

“ইভিএম ব্যবহার করে আমরা সর্বত্র ভোট জালিয়াতি, কারচুপি, কেন্দ্র দখল ইত্যাদি অভিযোগ থেকে রেহাই পেয়েছি, এমন দাবি আমি অন্তত করি না। কিন্তু, ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো নিরসন করার উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য। নির্বাচন বিষয়ক অনিয়ম ও অভিযোগ যথাযথভাবে আমলে না নেওয়ায় আমরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের দায়ে অভিযুক্ত হতে পারি। তবে, ভবিষ্যতে ব্যালট ও ইভিএম— উভয় পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ, একই নির্বাচনে দুইটি পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে ভোট প্রদানের শতকরা হারের অনেক তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। এই পার্থক্যের অর্থ ভোটগ্রহণের ফলাফলে বিভেদ সৃষ্টি। ভোটগ্রহণে এ ধরনের বৈষম্য কাম্য নয়।”