আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর আওতাধীন কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স)এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষা আজ (২১ মার্চ) সোমবার শুরু হয়েছে। এ বছর হাইআতুল উলইয়ার আওতাধীন দেশব্যাপী ৬টি শিক্ষাবোর্ডের মোট ২৪ হাজার ৯শত ২৯ জন শিক্ষার্থী এবারের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
.
এদিকে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষার্থীদের সফলতা কামনা করে বার্তা দিয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর সহকারী পরিচালক ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর সহসভাপতি প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মুবাল্লিগে ইসলাম আল্লামা মুহাম্মদ জসিমুদ্দীন (দা.বা.)।
.
সোমবার (২১ মার্চ) প্রদত্ত বার্তায় তিনি বলেন, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ইলমে-দ্বীনের ধারাবাহিক শিক্ষার্জনের চূড়ান্ত পর্যায়ে দাওরায়ে হাদীসের শিক্ষার্থীরা সমাপনী পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন। কওমি মাদ্রাসার সাধারণ সিলেবাসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীগণ যাতে পরীক্ষায় ভালফলাফল করতে পারেন, সে জন্য আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বিশেষ দোয়া করছি।
.
তিনি তরুণ আলেম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সুস্থির থেকে আগে প্রশ্নপত্র ভালভাবে বুঝে এদিক ওদিক না থাকিয়ে মনোযোগের সাথে সে মতে উত্তর দিতে চেষ্টা করবেন। সাথে সাথে হাইআতুল উলইয়া কর্তৃক পরীক্ষা হলের জন্য বিধিবদ্ধ নিয়ম মেনে চলবেন।
.
তিনি দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী তরুণ আলেমদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শেষে আপনারা নিজ নিজ অবস্থানে কর্মমুখর জীবনে ফিরে যাবেন। জীবন চলার পথ বড়ই কঠিন ও সংকটপূর্ণ। আপনারা দুনিয়াবী লাইনে পড়াশোনা না করে দ্বীন-ইসলামের বৃহৎ পরিসরে ভূমিকা রাখার মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে বেছে নিয়েছেন। সুতরাং ফারেগ হয়ে যাওয়ার পর এই লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে কখনো ভুলে যাবেন না। মনে রাখবেন, কওমি মাদ্রাসা মানে উম্মাহর বা জনগণের মাদ্রাসা। এই প্রতিষ্ঠানগুলো উম্মাহ চালায়। তাই কওমি মাদ্রাসার আলেম ও তোলাবাদেরকে সবসময় উম্মাহ বা জনগণের খাদেম হিসেবে চলতে হবে। তাদের আখেরাত ও দুনিয়াবি সমস্যার সমাধানে সাধ্যমতো নিয়োজিত থাকতে হবে।
.
এ পর্যায়ে মুবাল্লিগে ইসলাম আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন বলেন, উম্মাহর খেদমত বহুভাবে হতে পারে। তাদের সন্তানদেরকে দ্বীনি ইলমের শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে যেমন হতে পারে, তেমনি তাদেরকে সহীহ দ্বীন শিখতে ও মেনে চলতে সাহায্য ও উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমেও হতে পারে। দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যমে হতে পারে। এছাড়া মানবিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও উম্মাহর পাশে থাকতে হবে। নিজের পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশির খোঁজখবর, সহায়তা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে শরীক থাকবেন। এতে যেমন আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল রাজি হবেন, তেমনি জনগণের সাথে আপনাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে। দ্বীনি ও মানবিক কাজে সবসময় তাদেরকে সাথে পাবেন।