৫২তম হত্যা দিবসে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান শহীদ সার্জেন্ট জহুরের সমাধিতে জাসদের শ্রদ্ধা নিবেদন

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
0

স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রপথিক ও মহান শহীদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হকের ৫২তম হত্যা দিবসে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ৯ টায় আজিমপুর কবরস্থানে শহীদ সার্জেন্ট জহুরের সমাধীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুুল্লাহিল কাইয়ূম, শওকত রায়হান, জাসদ ঢাকা মহানগর দক্ষিন কমিটির সভাপতি হাজী ইদ্রিস ব্যাপারী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন, ছাত্রলীগ (হা-ন) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আহসান হাবীব শামীম, সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হক ননীসহ জাসদ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাসদ নেতারা উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সার্জেন্ট জহুর ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রপথিক ও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম শহীদ। তারা বলেন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরের আত্মবলীদান বাঙালিকে স্বাধীনতা ও মুক্তির লক্ষ্যে সংগ্রামে মরিয়া করে তুলেছিল। সার্জেন্ট জহুরের রক্ত প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে স্বাধীনতার মন্ত্র হিসাবে গৃহীত হয়েছিল। সার্জেন্ট জহুরের রক্তরঞ্জিত পথ বেয়েই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছিল।

তারা বলেন, সার্জেন্ট জহুর হত্যা বাঙালি জাতির হৃদয়ে প্রতিবাদের আগুণ জ্বেলে দিয়েছিল। বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শাসন-শোষনের নানা পাশ থেকে মুক্তির আন্দোলনে মরিয়া হয়ে ওঠে। তৎকালীন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে স্বাধীনতার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা ‘স্বাধীনতার নিউক্লিয়াসের’ তত্ত্বাবধায়নে ছাত্রলীগের বিপ্লবী ধারা শহীদ সার্জেন্ট জহুুরের স্বাধীনতা অর্জনের প্রচেষ্টা ও চেতনায় ‘সার্জেন্ট জহুরের রক্ত/স্বাধীনতার মন্ত্র’ শ্লোগানকে ধারণ করে সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে ১৯৬৯ সালে ‘১৫ ফেব্রুয়ারি বাহিনী’ ও ‘জহুর বাহিনী’ গড়ে তোলে। ১৯৭০ সালে এই জহুর বাহিনীর রেজিমেন্টাল পতাকা হিসাবে যে পতাকা তৈরি হয়েছিল সেই পতাকাই পরবর্তীতে জাতীয় পতাকায় পরিণত হয়। জহুর বাহিনীই পরবর্তীতে জয় বাংলা বাহিনী, জয় বাংলা বাহিনীই মুক্তিযুদ্ধে বিএলএফ তথা মুজিব বাহিনী হিসাবে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখে।

এখানে উল্লেখ্য, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বাঙালি জাতির আকাংখা ও প্রতিষ্ঠাকে চিরতরে দমন করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী ১৯৬৮ সালের ২২ জানুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী করে সার্জেন্ট জহুরুল হককে আটক করে ঢাকা সেনানিবাসের মধ্যে প্রহসণমূলক বিচার শুরু করে। এই প্রহসণমূলক বিচার চলাকালেই ১৯৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ক্যান্টনমেন্টে বন্দী সার্জেন্ট জহুরুল হককে নির্মমভাবে হত্যা করে।