৯/১১ হামলায় মদত দিয়েছিল সৌদি গুপ্তচর– এফবিআই’র প্রথম তদন্ত রির্পোট প্রকাশ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
0

এই প্রথম আমেরিকায় ৯/১১ হামলার তদন্তের বিশদ সামনে আনল ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। গত ২০ বছরে এই ঘটনাটি ঘিরে কয়েক হাজার তদন্ত হওয়ার কথা। তার মধ্যে একটি তদন্ত রিপোর্ট শনিবার প্রকাশ করেছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা।

আর সেই নথি প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ এফবিআই প্রকাশিত তথ্যে দাবি করা হয়েছে, ৯/১১ হামলায় সৌদি দূতাবাসের এক কর্মী ও এক সৌদি গুপ্তচরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিমান হামলাকারীদের সাহায্য করেছিল সৌদি দূতাবাস কর্মী এবং ওই গুপ্তচর। তদন্তে প্রকাশ, হামলাকারীদের থাকা, খাওয়া এমনকি নির্বিঘ্নে যাতায়াতেরও ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন এই দু’জন।

প্রকাশিত ওই নথি থেকে জানা যাচ্ছে, সৌদির অন্তত দু’জন নাগরিক হামলার কথা আগে থেকে জানতেন এবং ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হামলার আগে হামলাকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রেখেছিলেন। এঁদের মধ্যে একজন লস অ্যাঞ্জেলেসের সৌদি দূতাবাসের কর্মী। যিনি বিমান অপহরণকারীদের নানারকম রসদ জুগিয়ে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ।

অন্য জনের নাম ওমর আল বায়ুমি। সরকারি নথিতে ওমর সেই সময়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে পড়াশোনা করতে আসা সৌদির এক ছাত্র। যদিও এফবিআই তাকে চিহ্নিত করেছে সৌদির গুপ্তচর বলে। এমনকি রিপোর্টে এফবিআই লিখেছে, এই ওমরই বিমান হামলাকারীদের যাতায়াত, আশ্রয় এবং আর্থিক জোগানের ব্যাপারে নিয়মিত সাহায্য করেছেন। ওমর সম্পর্কে এফবিআইয়ের মূল্যায়ন, ‘হামলার ঘটনায় এই ব্যক্তি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।’ যদিও সৌদি সরকার তদন্তকারীদের এই সব দাবিই নস্যাৎ করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এফবিআই যে ৯/১১ হামলার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তবে সৌদির কোনও সরকারি প্রতিনিধি এই হামলায় যুক্ত ছিলেন, এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন।

২০১৬ সালেই সৌদির ওই দু’জনের কথা এফবিআই জানতে পারে। প্রকাশিত তদন্তের নথিটি ওই বছরের। কী ভাবে তাঁদের উপর গোয়েন্দাদের সন্দেহ পড়ল, তারপর তদন্ত কোন পথে এগিয়েছে, তার সবটাই নথিতে বলা আছে। তবে এর প্রেক্ষিতে আমেরিকার সরকার সৌদি প্রশাসনের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করেছে কি না, বা ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা রিপোর্টে স্পষ্ট নয়।

৯/১১ হামলার ২০ বছর পূর্তিতে শনিবার এফবিআই ওই তদন্তের নথি সামনে আনে। সিদ্ধান্তের কারণ ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি এগ্‌জিকিউটিভ অর্ডার।

৯/১১ হামলায় নিহতদের আত্মীয়রা একটি চিঠি লিখেছিলেন বাইডেনকে। সেই চিঠি পেয়েই বিশেষ নির্দেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। চিঠিতে নিহতদের নিকট আত্মীয়রা তাঁকে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট যেন নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে নিউ ইয়র্ক শহরের ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে না আসেন।

কেন না, তিনি এখনও পর্যন্ত তদন্তের বিশদ প্রকাশের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পালন করতে পারেননি। নিহতদের আত্মীয়রা চিঠিতে সৌদি যোগের কথাও জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, আমেরিকার সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন!