‌‌”মরণের পরেও তাদের আলাদা করা যায়নি ”

আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২১
0


ইউএনও শুক্লা সরকারের
হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার
বর্ণনা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : একজন মা তার কন্যা শিশুকে বুকের মধ্যে জাপটে ধরে মারা গেল! সেই ছবি তোলার সাহস হয়নি। এই ক্রেস্টটা কোন হতভাগার কে জানে!। সামাজিক যোগাযোম মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত একাউন্টে একটি ক্রিটেক টুর্ণামেন্টের ম্যান অব দ্যা ম্যাচের ট্রফির ছবির সাথে হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার বর্ণনা করে পোস্ট করেছেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার।

৪ এপ্রিল রবিবার বিকেলে সৈয়দপুর (বন্দরে মদনগঞ্জ) কয়লারঘাট এলাকায় কার্গোবাহী জাহাজের ধাক্কায় মুন্সিগঞ্জগামী সাবিত আল হাসান নামে যাত্রীবাহী লঞ্চডুরির ঘটনার পর থেকেই ইউএনও শুক্লা সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধার পর যখন ভয়ানক কাল বৈশাখী ঝড় বৈছিল। ঝড়ের মাঝেও তিনি সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। রাতে যতক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলমান ছিল ততক্ষণ পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত থেকে তদারকি করেছেন তিনি।

৫ এপ্রিল সোমবারও সকাল থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তিনি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। লঞ্চটিকে উদ্ধার করে বন্দরের মদনগঞ্জ এলাকায় নদীর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধারকর্মীরা লঞ্চের ভেতর থেকে একের পর এক লাশ উদ্ধার করার সময় দেখতে পান এক নারী এক শিশুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। জড়িয়ে ধরা অবস্থাতেই তাঁদের মৃত্যু হয় এবং লঞ্চের ভেতরেই আটকা পড়ে। জড়িয়ে ধরা অবস্থাতেই তাঁদেরকে উদ্ধার করেন উদ্ধার কর্মীরা

জড়িয়ে ধরা লাশ যখন উদ্ধার করা হয় তখন ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত সকলের মতো তিনিও আবেগাপুত হয়ে পড়েন। এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে এতটাই ভেঙ্গে পড়েন যে সেই দৃশ্যের ছবি তুলতেও সাহস পাননি তিনি।
পরে জানা যায় ওই নারী ও শিশু সম্পর্কে মা ছেলে। মায়ের নাম তহমিনা আক্তার (২০) তার এক বছরের শিশু পুত্র আব্দুল্লাহ।

লঞ্চ থেকেই উদ্ধার করা হয় একটি ব্যাগও। যে ব্যাগটি খোলার পর সেটির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল স্মরনীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২০২১ এর ম্যান অব দ্যা ম্যাচ এর ট্রফি মুন্সিগঞ্জের ইয়াং স্টার ক্রিকেট ক্লাবের উদ্যোগে ওই র্টুামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল।

মা ছেলের জড়িয়ে ধরা মর্মান্তিক দৃশ্যের ছবিটি তুলতে না পারলেও সেই ট্রফিটির ছবি তুলে ব্যাক্তিগত ফেসবুকে একাউন্টে পোস্ট করে তিনি হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার।

এম আর কামাল