‌’ ময়মনসিংহবাসী ,আমরা যদি ৬৪ জেলা থেকে আসতে পারি আপনারা নিজ বাড়িতে এক ফোটা আশ্রয় দেবেন না ‘

আপডেট: অক্টোবর ১৫, ২০২২
0

ডা জাকারিয়া চৌধুরী:

প্রিয় ময়মনসিংহবাসী, শুভেচ্ছা নিন। দেশের প্রয়োজনে টেকনাফ তেতুলিয়া থেকে মানুষ আসছে। তাদের হাতে এক গ্লাস পানি দিতে আসুন। তারা বড্ড তৃষ্ণার্ত, ক্ষুধার্ত। ভাত দিতে না পারেন ব্রুক্ষ্মপুত্র নদীর পানিই না হয় দেন। এ দেশ একটা মেহমানখানা। এই সুনাম আপনাদের জনপদে শত শত বছরের পুরনো ধারা। সেই সিলসিলা রক্ষার জন্য হলেও আসুন।

আপনারা ইশা খা’র জনপদের মানুষ। একজন ইশা খা একাই মোঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি মানসিংহের বাহিনীকে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর জন্য অবিভক্ত বাংলায় ১৬ শতকে সর্ব প্রথম নৌ – ঘাটি নির্মান করেন ইশা খা। আপনাদের সভ্যতা বহু প্রাচীন এবং সম্মানের। আজ এই বাংলার জনপদ ভীষন পড়ে গেছে। আপনারা আপনাদের সম্মান ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই না হয় আসুন। দল মত ধর্ম অধর্ম পাশে রেখে এগিয়ে আসুন। ‘বীরাংগনা সখিনা’ একজন কিশোরী হয়ে পুরুষের পোশাক পরে যদি যুদ্ধে নেত্রীত্ব দিতে পারেন, আপনারা কি সেই সত্যের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করতে পারবেন না !! অবশ্যই পারবেন। ভাটির মানুষ কি ভীষন প্রতিকূল মুহূর্তেও রুখে দাড়াতে পারে সেটা বারবার দেখেছি কিশোরগঞ্জে গিয়ে।

আপনাদের নরসুন্দা নদীটা কি এখনো আছে ভাই। শুধু এ নদীটার অবস্থা দেখার জন্য আমি যে কতবার করিমগঞ্জে গিয়েছি তার হিসেব নেই। আমি হতাশ চোখে দেখতাম শুধু লোভী মানুষদের কারনে নদীটা মরে যাচ্ছে।

এর পুর্ব পাড়ে করিমগঞ্জ বাজারের একটা টিনের হোটেলে ভাত খাওয়ার ছলে আমি নরসুন্দার দিকে তাকিয়ে থেকেছি দিনের পর দিন। আপনাদের আছে শোলাকিয়ার ঐতিয্য। শুধু নিজে দেখেই আমার সাধ মিটেনি। বউকেও জোর করে নিয়ে গিয়েছি দেখাতে। আমরা যদি ৬৪ জেলা থেকে আসতে পারি আপনারা নিজ বাড়িতে এক ফোটা আশ্রয় দেবেন না !! আপনাদে উপস্থিতি আমাদের জন্য আশ্রয়। আপনাদের সরল হাসি আমাদের তৃষ্ণা নিবারক। আসুন, সকলে আসুন। ভেদাভেদ ভুলে এক হোন। সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’।