উট পাখির মতো মুখ গুজে থাকা মিডিয়াকে কঠিন মূল্য দিতে হবে–এম আবদুল্লাহ

আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২১
0

বিএফইউজের সভাপতি, সিনিয়র সাংবাদিক এম আবদুল্লাহ হুশিয়ারী করে বলেছেন, ‘উট পাখির মতো মুখ গুজে থাকা মিডিয়াকে কঠিন মূল্য দিতে হবে’ । গতকাল শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে মোদি বিরোধী স্লোগান দেয়ায় মুসল্লীদের হামলা এবং পরবর্তীতে দুই জেলায় হেফাজতের ওপর পুলিশের গুলিশে ৭জন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় মিডিয়ার ভূমিকায় নিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে আজ এসব মন্তব্য করেন। এম আব্দুল্লাহর পুরো স্টাটাসটি তুলে ধরা হলো ………….

এই মিডিয়াকে চরম মূল্য দিতে হবে 🔻
জনগণের আবেগ অনুভূতিকে উপেক্ষা ও তুচ্ছ করে যে মিডিয়া উটপাখির মত বালিতে মুখ গুঁজে আছে, সেই মিডিয়াকে কঠিন মূল্য দিতে হবে। অবশ্যম্ভাবী দুর্দিনে পতিত হলে মিডিয়ার পাশে জনগণ দাঁড়াবে না। করোনায় সংবাদপত্রের পাঠক যখন তলানিতে তখন কিন্তু এ জনসাধারণের কাছেই কাকুতি মিনতি করেছেন যাতে সংবাদপত্র আবার তারা হাতে তুলে নেয়। বিজ্ঞাপন দিয়ে যাতে পাশে থাকে।

মিডিয়া কোন পক্ষ নিক তা পাঠক চায় না। আমিও না। কিন্তু ঘটনা ঘটলে তা দেখেও না দেখার ভান করা, ব্লাক আউট করা, এটা সাংবাদিকতার কোন নৈতিক মানদণ্ডে পড়ে? আমার সাংবাদিক বন্ধুরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকে খবর সংগ্রহ করলেও তা প্রকাশ করেছেন না বড় কর্তারা। মিডিয়ার অর্থের যোগানতো এদেশের জনগণ তথা পাঠক ও বিজ্ঞাপনদাতারা দেন। মোদিও কি দেন? গত নির্বাচনের সময় সেখান থেকে থোক বরাদ্দ মিলেছিল বলে শোনা যায়? তা কি সত্যি? সেই ঋণ কি শোধ করছেন?

গতকাল দিনে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন এলাকায় যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হলেও আজকের সংবাদপত্রে তার প্রতিফলন নেই। গতরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভকারীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করলো ছাত্র লীগ, তা দেখেনি অধিকাংশ মিডিয়া।

আজ বায়তুল মোকাররম থেকে হাটহাজারী পর্যন্ত কয়েকঘন্টা যুদ্ধ চললো, হাটহাজারীতে ৪জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন জীবন দিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবাদী জনতা ঢাকা-সিলেট রেল চলাচল পর্যন্ত বন্ধ করে দিল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে দুপুর থেকে- এসব খবর যেনতেনভাবে পরিবেশন করে মিডিয়া বুঁদ হয়ে আছে মোদী মাদকতায়। সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়িসহ কয়েকটি স্থানে অবরোধ চলছে। তা মিডিয়া প্রচার করতে পারছে না। এই মিডিয়ার পাশে কেন দাঁড়াবে মানুষ?

অনেকে হয়তো বলবেন – মোদি বিরোধীরাই শুধু জনগণ বা মিডিয়ার পাঠক-দর্শক নয়। এর উত্তর পাবেন বিভিন্ন অনলাইন জরিপের ফলাফলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কমেন্টে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সরকারের হুমকির দোহাই দেবেন অনেকে। আমার বিশ্বাস আজ যদি সব সম্পাদক ও প্রকাশক একযোগে সিদ্ধান্ত নেন, যা ঘটবে, তা লিখবেন, কোন বিধিনিষেধ মানবেন না। তা হলে সরকার মিডিয়ার ওপর খবরদারির দুঃসাহস দেখাবে না।

মোদির বিরুদ্ধে তাঁর নিজ দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেখানে মোদির পোশাকি বাহিনী বা দলীয় ক্যাডাররা কয়জনকে গুলি করে বা পিটিয়ে মেরেছে? এখানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে দিলে কী হতো? নাকি দেখাতে চাইছেন যে, আপনার প্রেমে উতলা হয়ে আমি নিজের মানুষ পর্যন্ত খুন করছি, অতএব আমার গদি টিকাতে আগ্রাসন বাড়ান, যতখুশি নিয়ে যান।