রূপগঞ্জে বাক প্রতিবন্ধির স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা

আপডেট: এপ্রিল ১৫, ২০২১
0
rape

স্টাফ রিপোর্টার, নারাযণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাক প্রতিবন্ধির স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার পর ধর্ষণের চেষ্টা করলে ওই ছিনতাইকারীকে চিনে ফেলায় গলাটিপে হত্যা চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) অভিযোগ দায়েরের পর মামলা নিতে অসহযোগীতা করছে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই।

বীর হাটাবোর এলাকার বাসিন্দা কামিজদ্দিন জানান, তার মেয়ে আফরোজা আক্তার (৩০) গত ১১ এপ্রিল সকালে হাটাবো থেকে কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় অটোরিক্স্ায় করে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমদিয়া কাজিরটেক এলাকার পৌঁছলে ওই অজ্ঞাত অটোচালকের সহযোগীতায় পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা বীর হাটাবো নাগদা পাড়ার ইসলামউদ্দিনের ছেলে মোগলসহ অজ্ঞাত আরো ৩জন হামলা চালায়। এ সময় ছিনতাইকারীরা আফরোজাকে মুখ বেঁধে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে যায়।

পরে তার গলায় থাকা ১ভরি ২ রতি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার যার আনুমানিক মুল্য ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিলে এলোপাতারি মারধর করে ছিনতাইকারীরা। এ সময় আফরোজা জোড়ে শব্দ করলে বীর হাটাবো গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের ছেলেহালিম ঘটনাস্থলে দৌড়ে যায়। এতোক্ষণে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। তবে হালিম মিয়া শুধুমাত্র ইসলামউদ্দিনের ছেলে মোগলকে চিনতে পারে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় চিনতে পারেনি। পরে আফরোজাক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে ভুক্তভোগীর ভাই মোশারফ মিয়া অভিযোগ, আমার বোন আফরোজার স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার পর ধর্ষণ চেষ্টা করা হলেও ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের দারোগা সানোয়ার হোসেন রহস্যজনক কারণে এ ঘটনার অভিযোগপত্রে ধর্ষণ চেষ্টা‘র কথা লিখতে দেয়নি। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পূর্ব শত্রুতা লিখা হয়েছে। আমার পিতা মুর্খ থাকায় তা বুঝতে পারেনি। ফলে ওই দারোগা আমার বোনের বিচার পেতে সহযোগীতার বদলে বাদীকে অনুৎসাহিত করছে।

দারোগা আমার মুঠোফোনে বলেছেন, আফরোজা বাক প্রতিবন্ধী। তাই আদালতে স্বাক্ষী দিতে পারবেনা, মামলা করে লাভ হবে না। অযথা হয়রানী হবেন। তাছাড়া অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে পারলে মামলা নেয়া হবে বলে শর্ত জুরে দেন। তবে অভিযুক্ত উপসহকারী পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন বলেন, বাদী পক্ষকে বলেছিলাম, অভিযুক্তদের অবস্থান জানাতে বা ধরিয়ে দিতে। বাদী পক্ষ গরীব, অসহায়। তারা থানা ও আদালতে দৌড়াতে পারবে না ভেবে এ কথা বলেছি। তবে অসহযোগীতা করবনা। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করতেছি। এছাড়া অভিযুক্ত মোগল মিয়া পলাতক থাকায় তার সনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত মোগল ও তার অধীনে একটি চক্র পূর্বাচলে ঘুরতে আসা লোকজনের কাছ থেকে সুযোগ বুঝে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এমন ঘটনা আরো রয়েছে। এছাড়াও তারা এলাকায় মাদকসেবী হিসেবে চিহ্নিত।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম জসিম উদ্দিন বলেন, কোন পুলিশ সদস্যের এমন বক্তব্য হতে পারে না। ঘটনা তদন্ত করে প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিধি ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর প্রতিবন্ধি আফরোজার অভিযোগ পেয়েছি। জড়িতদের আইনের আঁওতায় আনা হবে।