হেফাজতে ইসলামের সাথে সরকারই সম্পৃক্ত – ওবায়দুল কাদেরকে জবাব মীর্জা ফখরুলের

আপডেট: এপ্রিল ২২, ২০২১
0

‘হেফাজতে ইসলামের সাথে সরকারই সম্পৃক্ত’ বলে অভিযোগ করে্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদেরের বক্তব্যের প্রতি ইংগিত করে বৃহস্পতিবার বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব পাল্টা এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘এরা(সরকার) ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে্ছে। ২৬ মার্চের পর থেকে গত কয়েকদিনে বোধহয় কয়েক হাজার গ্রেপ্তার করে ফেলেছে এবং শুনলে অবাক হবেন আমাদের চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষবাড়ীয়া, ঢাকায় দলের(বিএনপি) কর্মীরা তারা রাতে বাসায় থাকতে পারে না।ব্লক রেইড করছে, কেরানীগঞ্জে ব্লক রেইড করে আমাদের নেতা-কর্মীদের অ্যারেস্ট করছে।কিছু বলতে গেলেই তারা বলে যে হেফাজতের সাথে সম্পৃক্ত আছে।”

‘‘ আরে হেফাজতের সাথে সম্পৃক্ত তো আপনারা। আপনারা বসে, প্রধানমন্ত্রীর বাসায় বসে মিটিং করে তাদের(হেফাজতে ইসলাম) সঙ্গে চুক্তি করে্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে কওমী মাতা হিসেবে উপাধি দেয়া হয়েছে। আমরা হেফাজতের সাথে সম্পৃক্ত হলাম না আপনারা।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো সরাসরি বলে ফেলেন এতো কোটি টাকা দিয়েছি, আমরাই একমাত্র কাজ করছি। আর তো কেউ কাজ করছে না- এ্সব কথা বলেন। দায়িত্ব তো আপনারাই নিয়েছেন। দায়িত্ব তো পালন করতে হবে আপনাদেরকেই।”

‘‘ সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আপনারা প্রতি পদে পদে জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। আপনারা জনগনের সমস্ত আস্থা হারিয়েছেন, বিশ্বাস হারিয়েছেন।এখন অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছেন।এই দেশটাকে একটা পু্লিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।”

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে কয়েকটি বাম সংগঠন এবং হেফাজতে ইসলাম নামে একটি সংগঠনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ এখানে যে কোনো সংগঠনে, যেকোনো রাজনৈতিক দলের যে কোনো প্রতিবাদ করা তো তাদের অধিকার, এটা তার সংবিধান সম্মত অধিকার।”

‘‘ আপনি গণতন্ত্রের কথা বলবেন অথচ কাউকে প্রতিবাদ করতে দেবেন না, আপনি কাউকে কথা বলতে দেবেন না, অন্যায়গুলোকে তুলে ধরতে দেবেন না, ভুলগুলোকে চিহ্নিত করতে দেবেন না। তাহলে কিভাবে একটা সরকার চলতে পারে। যেটা তো আর যাই হোক গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না।”

একাদশ সংসদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ পার্লামেন্ট আপনাদের একটা আছে সেই পার্লামেন্টে আপনাদের লোকজন সব বসে আছে, আপনারাই নিশ্চিত করে দিয়েছেন কারা কারা পার্লামেন্ট সদস্য হবেন, কারা কারা হবেন না এবং সেই পার্লামেন্টে যা খুশি তাই আপনারা করছেন।”

‘‘ একটা দিনও শুনিনি আমি যে, করোনা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে, একটা দিনও শুনিনি যে, সেখানে জনগনের আর্থিক অবস্থা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে। সেখানে শুধু বন্ধনা, বন্ধনা আর বন্ধনার স্তুতি আমি শুনেছি। আজকে সমস্ত দেশে একটা ত্রুটির মহোতসব চলছে।”

করোনা মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ করোনায় এখন আমাদের আল্লাহর উপর ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর কোনো কিছু করার নেই। ভ্যাকসিন প্রথম বার যারা নিয়েছেন, তারা দ্বিতীয়বার সবাই ভ্যাকসিন পাবেন কিনা তা আমি জানি না। কারণ যা শুনতে পাচ্ছি যে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিচ্ছে। একজন কিছুদিন আগে বলেছেন যে, একটা মাত্র দেশের উপরে এই যে নির্ভর করে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা-এটাও তো একটা ক্রিমিনাল ওফেন্স। আপনাকে একটা সরকার চালাতে হলে অনেক পথ খোলা রাখতে হবে। আপনি চীনকে বলে দিলেন যে, না তোমার এটা আমার দরকার নেই, ফেরত দিয়ে দিলেন।”

‘‘ আপনারা ভারত থেকে নেয়া শুরু করলেন। তাও আবার অনেক বেশি দামে তাও ব্যাক্তি মালিকানায় একজন ব্যবসায়ীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য তার কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন আপনি নিচ্ছেন। এটা গর্ভামেন্ট টু গর্ভামেন্ট নেয়া যেতো। অন্যান্য দেশগুলো নিচ্ছে।”এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘একটি পথ বের করার’ আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।