গাজীপুর সসংবাদদাতাঃ গাজীপুরে মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে গিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার দৃশ্য প্রচার করেছেন পূবাইলের তিন সন্তানের জনক এক ব্যবসায়ী। তার আত্মহত্যার দৃশ্যের ভিডিওটি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহতের নাম- স্বপন চন্দ্র দাস (৪২)।
তিনি মহানগরীর পূবাইল থানাধীন নয়ানীপাড়া এলাকার নগেন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে। স্বপন চন্দ্র দাস পূবাইল বাজার কেন্দ্রীয় রাধা মাধব মন্দির পূবাইল থানা পূজা উদযাপন কমিটির অর্থ সম্পাদক এবং আশার আলো সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
জানাগেছে, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার দিবাগত রাতে খাবার স্বপন চন্দ্র দাসের পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়েন। তবে তার স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। রাত ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে নিজের শয়ন কক্ষ থেকে ফেসবুক লাইভে আসেন তিন সন্তানের জনক ব্যবসায়ী স্বপন চন্দ্র দাস। এসময় তিনি ফেসবুক লাইভে থেকে প্লাস্টিকের মোড়ার উপর দাঁড়িয়ে ঘরের আঁড়ের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন। পরে তিনি পায়ের নীচ থেকে ওই মোড়া সরিয়ে দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে পড়েন। ফাঁসিতে ঝুলে পড়ার কয়েক মুহুর্তেই তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মধ্যরাতের এ দৃশ্য ওই মুহুর্তে প্রতিবেশী শরিফসহ অন্ততঃ ৩০ থেকে ৩৫ জন ভিউয়ার সরাসরি দেখতে পান। ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যার দৃশ্যটি দেখতে পেয়ে স্বপনের ব্যবসায়ীক পার্টনার আনোয়ার হোসেনের ছেলে নীরবকে ফোন দিয়ে বিষয়টি দ্রুত জানতে বলেন শরীফ। খবর পেয়ে প্রতিবেশী কয়েকজন দ্রুত স্বপনের বাড়িতে গিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্বপনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। নিহতের স্ত্রীসহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
এর আগে দুপুরে তিনি তার ফেসবুক আইডি থেকে অনেকগুলো ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘জীবনের কিছু স্মৃতিময় মূহুর্ত। হয়তো এটাই জীবনের শেষ আপলোড।’
এদিকে তার আত্মহত্যার দৃশ্যের ভিডিওটি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বদা হাসিখুশির এ ব্যক্তিটি হঠাৎ আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে। তার মৃত্যুর জন্য ব্যবসায়ীক পার্টনারদের মাঝে বিরোধকে দায়ী করছেন অনেকেই।
জিএমপি’র পূবাইল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহ আলম জানান, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ও লাইভে গিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ব্যপারে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।