বউ পেটানোর পরামর্শ দিলেন মালয়েশিয়ার নারী মন্ত্রী

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
0

বিশ্বজুড়ে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের দাবিতে লড়াই চলছে বছরের পর বছর ধরে। নারীদের ক্ষমতায়ন, স্বাধীনতা নিয়ে সরব হচ্ছেন নারী-পুরুষ সকলেই। পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সারাবিশ্ব সোচ্চার হয়ে উঠেছে। আর এমন অবস্থার মধ্যেই অবাধ্য বউকে সবক শেখাতে মারধর করার পরামর্শ দিয়েছেন এক নারী মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার নারী ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী সিতি জাইলাহ মোহাম্মদ ইউসুফ ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করে এই পরামর্শ দেন।

সেই পোস্টে স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বার্তাকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববাসী।

দুই মিনিটের ওই ভিডিওতে সিতি জাইলাহ বলেন, স্বামীর উচিত স্ত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া যে তিনি প্রয়োজনে কঠিন হতে পারেন। স্ত্রীর চারিত্রিক পরিবর্তন চাইলে সেটাও স্বামীর বুঝিয়ে দেওয়া উচিত। মালয়েশিয়াবাসীকে সংসারিক বিষয়ে পরামর্শ দিতেই ইন্সটাগ্রামে ওই ভিডিও পোস্ট করেন তিনি।

ভিডিওতে তিনি বলেন, যে সব নারী কথা শোনেন না তাদের অনুশাসন করার উচিত স্বামীর। শাসনে কাজ না হলে তিন দিন আলাদা বিছানায় শোয়া উচিত। তারপরও স্ত্রী স্বামীর বাধ্য না হলে স্ত্রীর গায়ে হাত দিতে পারেন স্বামী। অল্প মারধরও করতে পারেন। এর ফলে স্ত্রী অনুভব করবেন স্বভাব পরিবর্তন না হলে স্বামী কতটা কঠিন রূপ ধারণ করতে পারেন।

ভিডিওতে নারীদের প্রতি মন্ত্রী পরামর্শ দেন, স্বামী অনুমতি দিলেই তবেই তার সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা উচিত। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, স্বামীর মর্জি বুঝে, তার খাওয়া-দাওয়া শেষ হওয়ার পর, যখন স্বামী অবসর সময় কাটাচ্ছেন, তখন তার সঙ্গে কথা বলুন। কোনো বিষয় তোলার আগে অনুমতি চেয়ে নেবেন।

এদিকে সিতি জাইলাহর এই ভিডিও বার্তার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। নেটিজেনদের মতে, একজন নারীর মানবাধিকার নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ইউসুফ।

এক নেটিজেন বলেছেন, পুরুষ, নারী, শিশু বা পশু কাউকেই মারার অধিকার থাকতে পারে না কোনো মানুষের। লজ্জাজনক মন্তব্য!

আরেক নেটিজেন বলেন, ছি! আপনি একজন মন্ত্রী! এমন মন্তব্য কী ভাবে করতে পারলেন! আপনার উচিত পদত্যাগ করা।

তবে শুধু নেটিজেনরাই নয়, মালয়েশিয়ার একটি মানবাধিকার সংগঠন ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ওই ভিডিও বার্তার নিন্দা জানিয়ে মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।