‘শুভ জন্মদিন যুবদল, একদিন হবেই জয়’

আপডেট: অক্টোবর ২৭, ২০২২
0

ডা.জাকারিয়া চৌধুরী :

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র যুব অঙ্গসংগঠন। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার মহান ঘোষক জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে ১৯৭৮ সালের ২৭ অক্টোবর ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল’ নামে বিএনপির যুব সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকালীন এ সংগঠনটির আহ্ববায়ক ছিলেন জনাব আবুল কাশেম যিনি পরবর্তীতে সভাপতি এবং সাইফুর রহমান প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল
বর্তমান সভাপতি
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু
এবং সাধারন সম্পাদক
Abdul Monayem
প্রতিষ্ঠা সন-
১৯৭৮ ইং
সদর দপ্তর
পল্টন, ঢাকা।
ভাবাদর্শ
জাতীয়তাবাদ, অগ্রগতিশীল
মাতৃ সংগঠন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।

প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৭ সালের ২৩ মার্চ দ্বিতীয়, ১৯৯৩ সালের ৮ অক্টোবর তৃতীয়, ২০০২ সালে চতুর্থ, ২০১০ সালের ১ মার্চ পঞ্চম এবং ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি সংগঠনটির সর্বশেষ ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু দলটির সভাপতি ও মোনায়েম মুন্না সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। যুবদলের প্রধান কার্যালয় নতুন পল্টন, ঢাকায় অবস্থিত। ( এটুকু নিয়েছি হুবহু উইকি থেকে )

আমি নিজেকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে রেখে কথা বলছি। আমিও মনে প্রানে একজন যুবদল কর্মী। সু-রাজনীতি দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যোগ্যতা-দক্ষতা-ডেডিকেশন সততা এবং অতীত কর্মকান্ডে তুমি নিজেকে কতটুকু গড়ে নিয়েছো, তাঁর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় এর নেতৃত্ব। এটা আমার ব্যাক্তিমত। আমি দীর্ঘদিন যাবত যুবদলে আছি। আমার নিজস্ব একটা পর্যবেক্ষন আছে। সে পর্বেক্ষনে ভুল হতে পারে। কিন্তু যুবদল যে ভবিষ্যত সু-নেতৃত্ব গড়ে তোলার একটা কারখানা এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। এখানে যারা প্রতিযোগিতায় অবতীর্ন হয়, তাদের অতীত আমলনামায় সোনা রুপার ছাপ কোথাও না কোথাও রেখে আসে। এরা যোগ্য। সাহসী, ত্যাগী এবং প্রচুর নেতা এখানে আছে যারা কেবল দেশ রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। কারো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে, কেউ কেউ নিজের পরিবার পরিজন হারিয়ে ফেলেছে। যা বলছি, আজকের চলমান যুবদলের কথা বলছি। গত পনেরো বছর যারা বিরতিহীন কাজ করে গেছে তাদের গল্পগুলো ‘আয়নাঘরের’ চেয়ে ছোটো কিংবা অবাস্তব নয়। কথা বলছি তো আপন পর্যবেক্ষন থেকে-ই, তাই না !!
রাজনীতি; এটা একটা নেশার মত। ছাত্রদল ছেড়েছি সেই ২০০৫-০৬ সেশনে……….. রাজনীতি ছাড়ার পর খেয়াল করলাম আমার স্বাধীন জীবনটাও যেন শংকায় চলে যাচ্ছে। মঈনুদ্দিন’রা যাকে তাকে যেনতেনভাবে যেন গিলে ফেলতে চাইছে। বিশেষ করে আমাদের বর্তমান এ্যাক্টং চেয়ারপার্সন জনাব Tareque Rahaman এর উপর যে বর্বরতা হলো; তা দুনিয়ার কোনো আইন দ্বারা জাস্টিফাই করা সম্ভব নয়। তারপর থেকে আজতক এদেশের মুক্তচিন্তার কোনো মানুষ নিজেকে স্বাধীন ভাবতে পেরেছে বলে বিশ্বাস করিনা। সেই সিলসিলা দিনে দিনে দানব থেকে বড় দানবে পরিনত হয়েছে। দেশ একটা দম বন্ধ করা পরাধীন অবস্থায় আছে বলে মনে হয়। যেদিকে তাকাই সেদিকেই কেবল শুন্যতা আর শুন্যতা দেখি। আমরা যখন ছাত্রদল শুরু করি, তখন যে যুবদল দেখে এসছি সত্যি বলতে কি সেসব ছিল এক সময়ের বিগ ড্রিম যে আমি একদিন যুবদল হবো, যুব দলের হবো, বিএনপির হবো, সবচে বড় কথা দেশের মানুষের আপনজন হয়ে উঠব । যুবদলের শক্ত ভিত্তিতে কোন সরকার কখনো খুব বড় কোনো আঘাত করে পেরে উঠেনি। গয়েশ্বর দাদার কথা কি মনে আছে ? মির্জা আব্বাস ভাই সহ হাজার নেতা তৈরী করেছে যুবদল। বর্তমান যুবদলে টুকু ভাই, মুন্না ভাই, মামুন ভাই, ইসহাক সরকার ভাই, কামরুজ্জামান দুলাল ভাইদের আত্মত্যাগ ঠিক লিখে শেষ করা যাবে না। জীবন যৌবন বলতে গেলে তো সবই তারা খুইয়েছেন দেশটাকে আগের শান্তিপুর্ন অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। বলুন ত, এমন কোন যন্ত্রনা আছে যা সহ্য তারা করেননি ? তাদের মত পোড় খাওয়া সম্মানিত যোগ্যতম নেতারা থাকতে আমরা কোন হতাশায় কাঁদছি ?
তুমি তো ভাই কুয়োর ব্যাং, তোমার অত খবর জেনে কাজ কি ?
যদি কেউ জিগেস করে আমার উত্তর একটাই। ওই যে, যুবদল হবার নেশায় মেতেছিলাম এতগুলো বছর। এখন আমাদের, আমাদের সংসার গুলোর অবস্থা কি ক’জনা জানে ? তৃনমুলে কত শত সংসার ধ্বংস হয়ে গেছে ! কত শত শত কর্মী স্রেফ ভিক্ষুক হয়ে গেছে জানে কয়জন? বলেই বা কয়জন!! আমরা আজ কাঁদছি। এই কান্না দেশের জন্য। চোর হিসেবে আখ্যায়িত হবার মত সম্ভবতঃ বিএনপিতে এখন তেমন কেউ আর নেই। যারা টিকে রয়েছে তারা দেশের জন্যে-ই টিকে আছে।

আসুন আপনারাও সকলে আসুন। দেশরক্ষার আন্দোলনে শামিল হোন। এই দেশ কারো বাপ দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। দেশে দুর্ভিক্ষ ঘনিয়ে আসছে। এই জগদ্দল পাথরকে সরাতে আন্দোলন করছে বিএনপি সহ সমমনা দল গুলো। জাতির সন্তা হিসেবে, এদেশের জনগন হিসেবে, নিজেদের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে জনগনের অংশগ্রহনের বিকল্প নেই। খুলনার মানুষ পেরেছে, চট্রগ্রামের মানুষ পেরেছে। বাকি সব জেলার মানুষও পারবে। কেউ বসে থাকবেন না। ডাক এলেই জাতীয় পতাকা হাতে বের হয়ে যাবেন। এ জাতি হারেনি কখনো, এ জাতিকে দমিয়ে রাখা যায়নি, এ জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা জাতি। যেসব নেতাদের নাম আগে গর্ব ভরে উচ্চারন করেছি, তাদেরকে অনুপ্রেরনা হিসেবে আমরাও জাতির সামনে তুলে ধরতে পারিনি। তৃনমুলে এত সংকট থেকেও কেউ কখনো কম্প্রোমাইজ করেনি। বিএনপি বিলং করা একজনকেও এই দানবেরা দল পরিবর্তন করাতে পারেনি। হত্যা, খুন,গুম এসব করেছে। দেশের সব টাকা চুরি করেছে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, এ ত হলো সেই যুবদল যাদের ভয়ে পুরো রাম্বামেরা সর্বদা তটস্ত থাকত !!
আবারও বলি, আমরা আমাদের তৃনমুলে যুবদলকে সঠিকভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারছিনা। এখনো এই দ্বাবিংশ শতাব্দীতেও আনুগত্যের প্রথম পরীক্ষা হলো তুমি কার অনুসারী ! এ হল চরম সত্য। তৃণমূলে এ চর্চা এখনো চলে। অথচ আমরা আমাদের স্ত্রী সন্তান পিতা মাতাদের বিসর্জন দিয়েছি সে কবেই… আত্মীয় স্বজনেরা আমাদের পরিচয় আবার দেয় নাকি!! রাগ হয়,অভিমান হয়। ইচ্ছে করে বলি, মাঝে মাঝে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়ার অধিকার আপনারা আমাদেরকে দিন। এটাই গনতন্ত্র এটাই সুশাসন। ‘নেতা ক্ষিপ্ত হতে পারে, আমরা এটা ভাবতে চাই না’ এগুলো বর্বর শাসকদের মানায়। যেমন মানায় এই সরকার কে। এসব মধ্যযুগীয় ব্যাপার। আবার দেশের এই অরাজকায় জাতির কি কোনো ভুমিকা ছিল না ? নিশ্চয়ই ছিল। ওরা দীর্ঘদিন আসেনি । এখন যখন অস্তিত্ব সংকট দোড় গোড়ায় কড়া নাড়ছে তখন আসছে। বেটার লেট দ্যান নেভার। এ দেশের একটা অংশের মানুষ এখনো সেলফিস, দেশপ্রেমহীন, এবং নিজের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না। বিশ্ব দরবারে নিজেদেরকে নির্দিষ্ট করে কি পরিচয় দিবে – এ ভাবনাটাও তাদের নেই। আমাদেরকে অবশ্যই সত্যাশ্রয়ী হয়ে হবে। রাজনীতি করতে হলে এইসব মানুষ গুলোর কল্যানেই কাজ করতে হবে। আমাদেরকে বহু রক্ত দিতে হবে। ত্যাগের মহিমান্বিত মানসিকতা নিয়ে বড় হতে হবে। মুলত: এসবের অভাবেই দিনে দিনে আমরা অদৃশ্য কোনো লতাগুল্মে যেন আটকে ছিলাম। আমরা প্রশিক্ষিত হচ্ছিলাম না। এর মুলে রয়েছে আমাদের স্থবিরতা এবং আত্মত্যাগের মানসিকতা নিয়ে বড় হয়ে উঠতে না পারার অভাব। আমাদেরকে অবশ্যই সমন্বিত হতে হতে হবে। যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। নতুনের জন্য স্পেস ছাড়তে হবে। আজকের যুবদল আগামীর বিএনপি।

শুভ জন্মদিন প্রিয় যুবদল, শুভ কামনা সব সময়।

সব কিছুর পরেও আমি যুবদল কর্মী। আমরা যুবদল।
আমরা করবো জয়,
আমরা করবো জয় নিশ্চয়,
ওহো বুকের গভীরে আছে প্রত্যয়,
আমরা করব জয় একদিন
আমরা করবো জয় একদিন’।
শুভ জন্মদিন যুবদল। অনেক অনেক সাফল্য কামনা করি।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, দেশ জনতা ডটকম