জাবি ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২৪
0

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক মো: নূরুল আলমসহ প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষকদের একাংশ।

শনিবার (৩ আগস্ট) নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভিসি অধ্যাপক মো: নূরুল আলমসহ প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষকদের একাংশ। সংবাদ সম্মেলনে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার তিন দফা লিখিত দাবি উপস্থাপন করেন।
দাবিগুলো হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং হলগুলোকে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী মুক্ত করতে হবে, ভিসি মো. নূরুল আলম, সহভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সহভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবিরকে পদত্যাগ করতে হবে, ১৫ জুলাই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যারা নৃশংসভাবে আঘাত করেছে, তাদের বিচার করতে হবে।

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় প্রশাসন প্রত্যক্ষ মদদদাতা উল্লেখ করে মাফরুহী সাত্তার বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গত ১৫ জুলাই শান্তিপূর্ণ মিছিলে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসীরা বিনা উসকানিতে হামলা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনে বিচারের দাবিতে অবস্থান নেন। আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করেছি প্রক্টর, ভিসিসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ইন্ধনে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

সংবাদ সম্মেলনে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলীর সঞ্চালনায় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি, প্রশাসনের নির্দেশেই আক্রমণ করে শিক্ষার্থীদের আহত করা হয়েছে। সংগত কারণে এই প্রশাসন একটা লোকদেখানো তদন্ত কমিটি করে জাতিকে বোঝাতে চাচ্ছে তারা কী করছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী ঠিক যেভাবে মায়াকান্না করছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও তাই করছে। সংগত কারণে এই প্রশাসনকে আমরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে যে কারণে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, সেই একই কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। প্রধানমন্ত্রী আজকে (শনিবার) আটক সবাইকে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তার এ কথা আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ, প্রতিনিয়ত তারা গল্প বলে যাচ্ছে। সারা দেশে খুন, হত্যা হয়েছে তারা ছাত্রদের ধরবে না বললেও ছাত্রদেরই ধরে ক্রিমিনালাইজড করার চেষ্টা করছে। বলা হচ্ছে, এটা পুলিশ গুলি করেনি অন্য কেউ করেছে। এই গল্পগুলো আমরা বিশ্বাস করি না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক সামছুল আলম, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কলা ও মানবীকি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক শিবলী নোমান ও সালমা সাবিহা প্রমুখ।