‘Equal Rights to property and Resources is must for Gender Equality ‘ইভেন্ট অনুষ্ঠিত

আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৩
0

অনলাইনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অফ উইমেন এর (সিএসডব্লিউ) এর ৬৭ তম অধিবেশনে ’’ ’’Equal Rights to property and Resources is must for Gender Equality” শিরোনামে প্যারালাল ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইভেন্টে মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ, আপিল বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট। সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অমিত দাস গুপ্ত, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, আইনজীবী (আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগ), বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট; নীনা গোস্বামী, পরিচালক(প্রোগ্রাম), আইন ও সালিশ কেন্দ্র; নবনীতা চৌধুরী, পরিচালক, জেন্ডার, জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি (জিজেডি) এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ কর্মসূচি, ব্র্যাক; রওনক জাহান, পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), উইমেন এন্ড র্গালস এমপাওয়ারমেন্ট প্রোগ্রাম, কেয়ার বাংলাদেশ এবং সিউতি সবুর, সহযোগী অধ্যাপক, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

মূল বক্তব্যে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদে প্রদত্ত জেন্ডার সমতা, সিডও ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট; প্রচলিত বিভিন্ন ধর্মীয় আইনে বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার; অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য, প্রচলিত আইনে থাকা বৈষম্য; অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় নারীর প্রতি বৈষম্য, সামাজিক ভাবে প্রচলিত রীতিনীতির কারণে উপার্জিত সম্পদ ও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহারে নারীর প্রতি থাকা বৈষম্যসমূহ এবং বৈষম্যরোধে জেন্ডার রেসপনসিভ বাজেটের পর্যালোচনা করা হয়। এসময় বলা হয় ২০২২-২০২৩ (অর্থবছর ২০০২) অর্থবছরের জন্য, ৪৪টি মন্ত্রণালয় “নারীদের অগ্রগতি এবং জেন্ডারগত বিভিন্ন বৈষম্য নিরসনের জন্য জন্য মোট ২২৯,৪৮৪ কোটি টাকা পেয়েছে, যা দেশের জিডিপির ৫.১৬% এর সমান। এটি নারীদের অগ্রগতির জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে বৃদ্ধি করা হয়, যা ছিল ১৯৮,৫৮৭ কোটি টাকা (জিডিপির ৫%)। জেন্ডার বাজেটকে তিনটি ভাগে ভাগ করে ৪১% নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের সামাজিক অবস্থান উন্নীত করার জন্য, ৭% শ্রমবাজার এবং আয়বর্ধক কর্মকান্ডে নারীদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার জন্য এবং ৫২% নারীদের জন্য সহজে সরকারি সেবা পাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে এই বাজেট কীভাবে ব্যয় হবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে। বাজেটের লক্ষ্য পূরণ তিনি কৌশলগত পরিকল্পনা, সঠিক বাস্তবায়নের জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি সম্পদ ও সম্পত্তিতে জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে বৈষম্যমূলক আইনের সংস্কার করা; আইন প্রণয়নে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি;আইনের বাস্তবায়ন ও প্রয়োগে জোরালো ভূ’মিকা পালন, জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো এবং নারীদের জন্য সহায়তামূলক সেবা নিশ্চিত করা ইত্যাদি সুপারিশসমূহ তুলে ধরা হয়।

সভায় প্যানেল আলোচকরা সকলে তাদের বক্তব্যে সম্পদ সম্পত্তিতে সমান অধিকার না থাকায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। এব্যাপারে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক আইন পরিবর্তন ও সম্পদ সম্পত্তিতে সমান অধিকার সহ নারী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের দাবি অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে এবং বাস্তবায়নে সুপারিশ করেন।

সভায় মুক্ত আলোচনা শেষে দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, সিএস ডব্লিউএর উদ্যোগে অনলাইনে আয়োজিত এই ফোরাম বিশ্বের বিভিন্ন প্্রাšেত থাকা সকলকে একত্র করেছে। সম্পদ সম্পত্তিতে জেন্ডার সমতার বিষয়টি শতাব্দীব্যাপী নারী আন্দোলনের অনেক পুরানো ইস্যূ হলেও এখনো বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে অমীমাংসিত রয়ে গেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর প্রতি চলমান সহিংসতা ও বৈষম্য রোধ করে পূর্ণ মর্যাদা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সম্পদ সম্পত্তিতে জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কোন বিকল্প নেই। নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ সমতা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

মডারেটরের বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন নারী আন্দোলনের অন্যতম এজেন্ডা নারীর প্রতি সহিংসতা – এর কারণ হলো সামাজিক কাঠামোয় নারী-পুরুষের ক্ষমতার বৈষম্য। এই ক্ষমতার বৈষম্য অবসানের জন্য সম্পত্তির উত্তরাধিকার এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োজন। আজকের মূল প্রবন্ধে বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে এবং আলোচকবৃন্দও তাদের আলোচনায় বিষয়টির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

উক্ত প্যারালাল ইভেন্টে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ উইমেনের প্রতিনিধি এলিজাবেথ নিউম্যান, বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী হামিদা হোসেন, ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, প্ল্যান ইন্টারন্যশনা, আইডি, ওয়াইডব্লিউ সিএ অব বাংলাদেশ, নারীপক্ষ, ব্লাষ্ট, ব্রতী, আই ডব্লিউ পিজি সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্র ও জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলী এবং কর্মকর্তা সহ মোট ৮৮ জন উপস্থিত ছিলেন