বিনা দোষে র‌্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে ,যা গর্হিত কাজ—প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২২
0

র‌্যাবের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিনা দোষেই যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সোমবার সকালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-এর ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, র‌্যাব বা পুলিশ যে কেউ তারা নিজেরা যদি কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, আমরা কিন্তু তার শাস্তির ব্যবস্থা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যারা আমাদের বিনা কারণে, বিনা দোষে, র‌্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে যারা স্যানকশন জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরণের অপরাধ করলে, তারা কিন্তু তাদের কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি স্পষ্ট বলি, আমেরিকায় কিন্তু আপনারা দেখেছেন ছোট বাচ্চা ছেলে জাস্ট পকেটে হাত দিয়েছে, তাকে গুলি করে মারল অথবা রাস্তায় ফেলে পা দিয়ে গলাচিপে মেরে ফেলে দিল। সেখানে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে যদি কেউ কোনো অপরাধ করে, অপরাধ করলেও কিন্তু তাদের কিন্তু সেখানে কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দেশ পৃথিবীতে, যেখানে কেউ অপরাধ করলে আমরা তার শাস্তির বিধান করি।”

জঙ্গিবাদ, মাদক, খাদ্যে ভেজালসহ করোনাভাইরাস মহামারিতে র‌্যাবের ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “তারপরও দুর্ভাগ্যের বিষয়, যারা এ ধরনের অভিযান করে সাফল্য অর্জন করেছে, যারা হলি আর্টিজানের মতো ঘটনা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমরা সেটা উদ্ধার করি, জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক … বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সাফল্য … আমাদের এ সাফল্যে এরা কোনো দুঃখ পেয়েছে কি না বলতে পারি না। কিন্তু বাংলাদেশ যে এক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে এটা হল সত্য। আর সেক্ষেত্রে clique aqui এ ধরণের স্যানকশন জারি করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।” বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ক’জন বাংলাদেশি বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে জড়িত রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সব থেকে দুঃখজনক হল আমাদের দেশের কিছু মানুষ তারাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অপপ্রচার চালায়। যারা অপপ্রচার চালায় তারা কিন্তু অপরাধী। তারা কোনো না কোনো দোষে হয়ত চাকরি হারিয়েছে নয়ত দেশ ছেড়েছে। সেখানে যেমন যুদ্ধাপরাধীরাও স্থান পেয়েছে, তেমনিভাবে জাতির পিতার খুনি, আত্মস্বীকৃতি ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি সে ও কিন্তু আমেরিকায় বসবাস করছে। তাকে তারা ওখানে সিটিজেন করে নিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা বারবার অনুরোধ করছি, প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিয়েছি, একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছে, আমরা তার কাছে ধর্ণা দিচ্ছি। জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে আমরা আহ্বান করেছি যে এরা অপরাধী। এরা শিশু হত্যাকারী, নারী হত্যাকারী, খুনি।

পনের আগস্ট তারা খুন করেছে। তাদের আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। তারা অপরাধীদের রক্ষা করে তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে স্যাঙ্কশন দেয়। এটা যাদের চরিত্র তাদের বিষয়ে আর কী বলব।” মাদক চোরাচালান বন্ধে কক্সবাজারে পূর্ণাঙ্গ ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “দেশে কোন দিক দিয়ে মাদক প্রবেশ করে তা চিহ্নিত করা হয়েছে। মাদক চোরাচালান বন্ধে কক্সবাজারে পূর্ণাঙ্গ ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।” অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, “প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি।

সারা বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করে আমরা বিনিয়োগের আহ্বান করেছি। যেকোনো বিনিয়োগের পূর্বশর্তই হল, সুশৃঙ্খল সামাজিক ব্যবস্থা। আমরা সেটা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। সেক্ষেত্রে র‌্যাবের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। সে অবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।” অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।