আলেম- ওলামাদের মুক্তি না দিলে ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করবেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

আপডেট: জুলাই ৩, ২০২২
0

আলেম-ওলামা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্ধিদের মুক্তির দাবিতে ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, আজকে আমাদের একটা মাত্র দাবি দুই দিনের মধ্যে সকল আলেম, সকল রাজনৈতিক কর্মী, খালেদা জিয়াসহ জামিনে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় আপনার তৈরি হন ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করবো। ওদের জামিন ছাড়া এবার হাইকোর্টে কোনো জামাত হবে না।

রোববার ( ৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ কথা বলেন।

‘হয়রানীমূলক মামলায় রাজবন্দী ও ধর্মীয় দীর্ঘ কারাবাস, নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে গন মতামত কেন্দ্র।

কারাবন্দি হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ আলেম ওলামাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘মামুনুল হকের আইনি অধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তার পরিবারকে গত ১৫ মাসে একবার দেখা করতে দেওয়া হয়েছে। মামুনুল হকসহ অন্য আলেমদের তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া জালেমের কাজ।’
তিনি বলেন, হাজী সেলিমকে প্যারলে মুক্তি দিতে পারেন কিন্তু খালেদা জিয়াকে পদ্মা ব্রিজ দেখতে দিতে পারেন না। তাহলে আপনাদের বিচার কোথায়?

বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি হাসিনার চাকর না। আপনি জনগনের খাদেম।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি তাওবা করেন। তাওবা করে বলেন আল্লাহ যা খুশি করেছি এখন মাফ করে দাও আমাকে। আমি একটা স্বচ্ছ নির্বাচন দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘চিন্তা করেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) গাড়ি সামনে, পরে খালেদা জিয়ার গাড়ি, আর তার পেছনে তিন তিন মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়ায়া থাকবে। আস্তে আস্তে যাবো। এখনও সময় আছে, অন্যদিকে পয়সা খরচ না করে এক পূর্ণিমার রাতে চলেন না যাই! এইটাই হবে বাংলাদেশ। তার আগে মুক্তি দিতে হবে… এনাদেরও (আলেম) নিয়ে যাই।’

আপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে চাই আমরা জনগণ। আপনি শেখ মুজিবের মেয়ে, আমার বন্ধু ওয়াজেদ সাহেবের স্ত্রী আপনার প্রতি দরদ আছে আমাদের। দেশের মানুষও আপনাকে ভালোবাসে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.)সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বলেন,, বাংলাদেশের সংবিধানকে ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডের পাথর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ৫০ টি বছরে এ সংবিধানে এতো বেশি কাটাছেঁড়া হয়েছে যে মানুষের মনের চাহিদা, আইনের চাহিদা পূরন করতে পারছে না।

একটায় রাস্তা আছে হয় সংবিধানকে সংশোধন করো অথবা পূনরায় আগের জায়গায় নিয়ে যাও অথবা নতুন করে সংবিধান রচনা করো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলছেন, সংবিধানের বাইরে এক পা যাবো না। এক চুলও যাবো না। শক্তি ব্যাতিত বিএনপি আমলে দাবি আদায় হয়নি। এখনও হবে না।

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন,,,,আমি আলেম- ওলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এই মুক্তির জন্য লড়াইওকে যতোদূর নেওয়া উচিত আমি ততোদূর পর্যন্ত এই দলে যেতেও রাজি আছি। আমি যাদেরক্ব যাদেরকে পারবো তাদের নিয়েই এই লড়াই করতে চাই।

তিনি বলেন, যিনি দিনের ভোট আগের রাতে ডাকাতি করছেন। এটা কি ইসলামের পক্ষের কাজ। এর চেয়ে ইসলাম বিরোধী কাজ কি জতে পারে। যিনি এউ ইসলাম বিরোধী কাজ করছেন তাকে আবার আপনার অনুরোধ করবেন আপনি যদি ইসলামের পক্ষে থাকে তাহলে দুই’শ বছর ক্ষমতায় থাকেন আমি এর পক্ষে নেই।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ সরকারের সাথে ন্যূনতম আপোষের চিন্তা করে যারা যেকোনো আন্দোলন করছেন তার সঙ্গে আমি নাই। আমি মনে এরা শুধু ভোট চুর। ভোট ডাকাত তা নয়। এর বড় প্রতারক, মিথ্যুক, এদের কোনো ধর্ম নেই। এরা সবচাইতে বেশি ধর্মকে ব্যবহার করেছে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন,,, আমার দৃষ্টি সরকার সবচেয়ে ভঙ্কুর অবস্থার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর কর্মসূচি না থাকার কারনে তারা রিলাক্সে পার পেয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আলেম-ওলামা বা সাধারণ মানুষ বলেন। আগামীতে যখন ডাক আসবে পরিস্থিতি তৈরি হবে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজ পথে থাকবো।

গণ মতামত কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ শামসউদ্দিন এর পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মহসিন রশিদ,এলডিপি এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাংবাদিক নেতা বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খান, আইনজীবী গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বিপ্লব কুমার পোদ্দার, গণ মতামত কেন্দ্রের সমন্বয়ক মোর্শেদ সিদ্দকীসহ প্রমূখ।