গাজীপুর প্রতিনিধিঃ জনসেবার আড়ালে চুরি-ডাকাতি করতেন নেত্রকোনার কেন্দুয়ার এক ইউপি সদস্য। একটি বিদেশী কোম্পানীর সাড়ে ১৩ লাখ টাকার লুণ্ঠিত অটোরিক্সার দুইশতাধিক ব্যাটারি তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে গাজীপুরের শ্রীপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত ওই ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে রবিবার ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার দুরছাপুর এলাকার মৃত খয়রত খানের ছেলে মন্তাজ উদ্দিন খান (৪৫), একই এলাকার মৃত হাবিব উল্লার ছেলে জামাল মিয়া (৩৫) এবং টাঙ্গাইল জেলা সদরের ভল্লুক কান্দি এলাকার আফসার মোল্লার ছেলে মো. সুরুজ মিয়া (৩৮)। এদের মধ্যে মন্তাজ উদ্দিন খান ময়মনসিংহের ৬নং সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য।
শ্রীপুর থানার এসআই কামরুল হাসান জানান, শ্রীপুরের বেড়াইদেরচালা এলাকাস্থ চায়না লেক পাওয়ার সাপলাই বিডি লিঃ কারখানায় ব্যাটারি তৈরী করা হয়। গত ১২মার্চ ওই কারখানা হতে বগুড়ার এক ব্যবসায়ীর উদ্দেশ্যে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা মূল্যের অটোরিক্সার ২১১টি ব্যাটারী পাঠানো হয়। ব্যাটারী পাঠানোর জন্য কোম্পানীর মনোনীত পদ্মা ট্রাভেল এজেন্সির ম্যানেজার ইমরান খান রনি একটি পিকআপ ভাড়া করে দেয়। বিকেল ৪ টার দিকে ব্যাটারী নিয়ে পিকআপটি রওনা হলেও পথে নিখোঁজ হয়। এসময় পিকআপের চালক, হেলপার ও ট্রাভেল এজেন্সির ম্যানেজার তাদের মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় ওই বিদেশী কোম্পানীর কান্ট্রি ম্যানেজার আনিছুর রহমান বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
শ্রীপুর থানা পুলিশ এ ঘটনায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমে পিকআপ চালক জামালকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার দুরছাপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই গ্রামের ইউপি সদস্য (বর্তমান) মন্তাজ উদ্দিন খানের বাড়িতে রবিবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ লুণ্ঠিত ২১১টি ব্যাটারীর মধ্যে ২০৩টি উদ্ধার করে। এসময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউপি সদস্য মন্তাজ উদ্দিন খানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সুরুজ মিয়াকে চৌরাস্তা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার গ্রেফতারকৃতদের গাজীপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, দু’বার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেও মন্তাজ খানের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতির বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। চুরি-ডাকাতির অর্থ দিয়ে তিনি জমি জমা কিনেছেন। আবার কিছু অর্থ এলাকার গরীবদের মাঝে বিলিয়ে এলাকায় ‘দানবীর মন্তাজ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।