বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, দেশ আজ হায়নার মুখে। দেশে রাজনীতি নাই। দেশে যদি রাজনীতি না থাকে, রাজনীতির প্রক্রিয়ার এগিয়ে নেয়ে সম্ভব না হয়, তাহলে হায়নাদের কবল থেকে দেশেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলন আয়োজিত গণতন্ত্র, মানবাধিকার-ভোটের অধিকার চাই শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন। যদি দেশে রাজনীতি না থাকে, রাজনীতির প্রক্রিয়ার এগিয়ে নেয়ে সম্ভব না হয় তাহলে হায়নাদের কবল থেকে দেশেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। আমাদের অন্য প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, যার মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটবে। এখন কথা কম, কাজ বেশি- এটাকে সামনে নিয়েই আমদের এগিয়ে যেতে হবে। এটা আমি ২৮ তারিখের পরেও বলেছিলাম, এখনো বলছি। আমাদের ভোটাধিকার সংরক্ষণে মানবকল্যানের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। এর জন্য আমাদের যে জাতীয় নেতারা আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ৭ জানুয়ারির পর মানুষ একটা ধাক্কা খেয়েছে। আমরা এমনভাবে নেমেছিলাম, মানুষ ভেবেছিল এই সরকার এবার শেষ। কিন্তু তা হয়নি।
নিজেদের আন্দোলন প্রসঙ্গে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আমরা যে আন্দোলন করেছি তাতে কখনো ভাটার টান পড়েনি। বিএনপি যদি এখন একটা সমাবেশের ডাক দেয় তাহলে এখনো পল্টনের এক মাথা থেকে আরেক মাথা দেখা যাবে না। আমরা তো বলছি না আওয়ামী লীগকে সরিয়ে বিএনপিকে বসাব। আমরা বলছি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া হোক। এটা খুবই ন্যায্য একটা দাবি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে ভোট হয়ে গেলেই শেষ। এখন সেখানে কত পার্সেন্ট ভোট পড়েছে, কত মানুষ ভোট দিয়েছে সেটা তারা বলে না। তারা মঞ্চ সাজিয়েছে তাতেই শেষ। ৭ জানুয়ারিতে কি কোনো ভোট হয়েছে? সেটা কোনো ভোটই হয়নি। সেখানে ১ পার্সেন্ট ভোট পড়েছে, না কি ৫ পার্সেন্ট ভোট হয়েছে সেটা তারা দেখে না। তাই এই নির্বাচনে এই সরকারের কোনো প্রাপ্তি নেই। তারা কেবল ক্ষমতা আকড়ে ধরে রেখেছে।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরে যেটা হয়েছে সেটাই সরকার করে ছিল। সরকার তাদের রক্ষা করার জন্য যা করার দরকার ছিল সেটাই করেছে। কারণ তারা জানত যদি এই সমাবেশ ঠিকভাবে হয়ে যায় তাহলে এই সরকার আর টিকে থাকতে পারবে না।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, এই লড়াই যা-ই হবে, এই সরকারের সাথে কোনো আপস নেই। আর যারা এই সরকারকে মদদ দিচ্ছে তাদের সাথেও কোনো আপস করব না। সেটা চীন, আমেরিকা, রাশিয়া, ভারত যেই হোক না কেন। শুনেছি আমেরিকার কর্মকর্তারা না কি সরকারের সাথে কথা বলছে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়ার জন্য। এরকম শুনলে তো ভালোই লাগে। তাই আমাদের যুগপৎ আন্দোলন চলছে, চলবে। যখন সবাই মিলে রাজপথে নামবে তখন যেতে বাধ্য হবে।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, দুর্ভিক্ষ আমাদের দেশে ঢুকে যাচ্ছে। বর্ডারে শত শত ট্রাক কচুরমুখী নিয়ে দেশে ঢুকছে। কচুরমুখী কখন খায়? যখন দেশে দুর্ভিক্ষ আসে। মোদি সাহেব দেশে কচুরমুখী পাঠিয়ে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। আজকে আওয়ামী লীগের একেকটা নির্বাচন হচ্ছে একেকটা স্টাইলে। আর সেই নির্দেশনা আসছে ভারত থেকে। আজকে তারা পুরা জাতিকে দিশেহারা জাতিতে পরিনত করছে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন বলেন, গণতন্ত্রের প্রধান বাধা আওয়ামী লীগ। তারা তিনটা নির্বাচন করেছে। কিন্তু বিএনপিকে বাইরে রেখে। তারা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে চায় না। তাদের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায় না। আমাদের বিশ্বাস এই সরকার এবার তাদের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে না। আমরা এমন আন্দোলন করব যে এই সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।