মধু সংগ্রহ করে স্বাবলম্বী আলীম চারঘাটে এক নামেই পরিচিত মধু আলীম

আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২১
0

আবু সুফিয়ান,চারঘাট:

মৌমাছি মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচি, দাঁড়াও না একবার ভাই/ঐ ফুল ফোটে বনে যাই মধু আহরণে, দাঁড়াবার সময় তো নাই’ কবিতায় মৌমাছির এ কথাগুলো সত্যিই প্রমাণ করেছেন রাজশাহী চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের বালাদিয়াড় গ্রামের রুপচান আলীর ছেলে আব্দুল আলীম।

মৌমাছির এ কাব্যিক বক্তব্যের মতো অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমেই মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে আজ তিনি স্বাবলম্বী। ১৪ বছর ধরে মধু সংগ্রহ করে আব্দুল আলীম এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। আব্দুল আলীমকে এখন সবাই ‘মধু আলীম` নামেই ডাকেন।

কারিগরি প্রশিক্ষণ ছাড়া একজন মধু চাষীর পরামর্শ নিয়ে ২০০৭ সালে মাত্র ৪টি মধুর বাক্স নিয়ে শুরু হয় মধু আলীমের পথচলা। এখন তার খামারে দেড় শতাধিক মধুর বাক্স রয়েছে, যেগুলোর প্রতিটির মূল্য ৭/৮ হাজার টাকা। বছরে ৭/৮ টন করে মধু উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর পাশাপাশি প্রাণ কোম্পানিসহ বিভিন্ন কোম্পানির কাছে মধু সরবারহ করেন তিনি।

সরেজমিনে গেলে বালাদিয়াড় খামারে কর্মরত আলীম বলেন, ‘শখের বসেই ২০০৭ সালে ২ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে মাত্র ৪টি মধুর বাক্স কিনে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ শুরু করি। পরে চাকরির আশা না করে মধুর বাণিজ্যিক চাষ করে আসছি’। ‘বর্তমানে আমার মধু খামারে ৫ জন সহযোগী সারা বছরই মধু উৎপাদন করেন। ২০১৫-১৬ বছরে ২ টন, ২০১৬-২০১৭ বছরে ৩ টন ও ২০১৮-২০১৯ বছরে ৪ টন মধু পেয়েছি। এ বছরও আরও দ্বিগুণ পরিমাণ পাওয়ার আশা করছি’।

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে খামারের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করি। অক্টোবর থেকে কুষ্টিয়ার মিরপুর ও বিত্তিপাড়া এবং নাটোরের চলনবিলের সরিষা ফুলের মধু, এরপর কালজিরা ফুলের মধু সংগ্রহ করেছি। এরপর দিনাজপুর থেকে লিচুর মধু সংগ্রহ করে বাড়িতে ফিরেছি। আগামী রবিবার ঠাকুরগাঁও যাবো মিষ্টি কুমড়ার মধু সংগ্রহ করতে’।

আলীম বলেন, ‘গত বছর খামার থেকে এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও কোম্পানির কাছে ৩০০ টাকা কেজি দরে মধু বিক্রি করেছি। বেশিরভাগ কোম্পানিই স্বল্পমূল্যে মধু কিনে নিয়ে তাতে কেমিক্যাল মিশিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে। গাছি মধু সংগ্রহকারীরা মৌচাকে চাপ দিয়ে সংগ্রহ করেন। এতে মধুর গুণাগুণ ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। আর আমার খামারে যন্ত্রের সাহায্যে বাতাস দিয়ে সংগ্রহ করি। এতে আমাদের মধুর গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে’।

চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, ‘উপজেলার মৌ-খামারি আব্দুল আলীম মধুর চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার সাফল্য দেখে আরও অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষ ও সংগ্রহে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি অফিস থেকে মধু চাষে যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়।