র‌্যাব-১ এর অভিযানে গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের মামলার অভিযুক্ত গৃহকত্রীকে ভাটারা হতে গ্রেফতার

আপডেট: জুলাই ৩, ২০২১
0

র‌্যাব-১ এর অভিযানে গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের মামলার অভিযুক্ত গৃহকত্রীকে রাজধানীর ভাটারা হতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ৩০ জুন ২০২১ ইং তারিখ সন্ধ্যায় রাজধানীর ভাটারা থানাধীন কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বিবাদী মোহাম্মদ আসাদুর রহমান (৩৯) তার বাসার গৃহকর্মী ভিকটিম কুলসুমা আক্তার (১৪)’কে অসুস্থ অবস্থায় তার বোন ফাতেমা বেগম এর নিকট দিয়ে চলে যায়। ভিকটিম কুলসুমা আক্তারের বোন ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুনে পোড়া ক্ষতসহ বিভিন্ন দাগ দেখতে পায়।

পরবর্তীতে ভিকটিমের বোন ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে এবং এ বিষয়ে ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে ডিএমপি, ঢাকার ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর-০২ তারিখ-০১/০৭/২০২১ ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৪ (২)(খ)। গৃহকর্মীকে এই নির্মম নির্যাতনের ঘটনাটি বর্ণিত এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন টেলিভিশন ও সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা তাৎক্ষনিকভাবে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে দ্রুততম সময়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ জুলাই রাত ১০টায় র‌্যাব-১ এবং র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বর্ণিত গৃহকর্মী নির্যাতন মামলার অভিযুক্ত গৃহকত্রী মাহফুজা রহমান (২৫)পিরোজপুর’কে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ভিকটিম কুলসুমা আক্তারকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম কুলসুমা আক্তার (১৪) গত ১২ নভেম্বর ২০২০ ইং তারিখ বিবাদী মাহফুজা রহমান এর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। ভিকটিম বর্ণিত বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার পর থেকে সামান্য বিষয়ে বিবাদী ভিকটিমকে মারধর করত। কাজে সামান্য ভূল করলেই বিবাদী ভিকটিমকে লাঠি দিয়ে মারধর, প্লাস দিয়ে চুল ধরে টান দেয়া, রান্নার কাজে ব্যবহৃত খুন্তি আগুনে জ্বালিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত করাসহ বিভিন্ন উপায়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল।

গত ১৫ জুন ২০২১ ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০০০ ঘটিকার সময় বিবাদীর বাসায় ঘর পরিস্কার করতে দেরি হওয়ায় বিবাদীর স্বামী মোহাম্মদ আসাদুর রহমান লাঠি দিয়ে ভিকটিমের পায়ের উরুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং সে নিজে মাহফুজা রহমান ভিকটিমের চুলের মুঠি ধরে ভিকটিমকে মারধর করতে থাকে।

মারধরের একপর্যায়ে মোহাম্মদ আসাদুর রহমান গ্যাসের চুলার আগুনে রড় গরম করে ভিকটিমের ডান পায়ের হাটুর নিচের অংশে চেপে ধরে এবং মাহফুজা রহমান ভিকটিমের হাত গরম পানিতে চেপে ধরে। এতে ভিকটিমের হাটুর নিচে আগুনে পোড়া ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং হাতের তালুতে ফোস্কা পড়ে। এহেন শারীরিক নির্যাতনের ফলে ভিকটিম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে বিবাদীদ্বয় ভিকটিমকে তার বোনের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।