লু হাওয়ায় পুড়ে গেছে কয়েক হেক্টর জমির ধান : বাম্পার ফলনে মাড়াই -কাটাইতে খুশি কৃষক

আপডেট: এপ্রিল ২৬, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-

বৈশাখের শুরু থেকে লু হাওয়ায় কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার পরেও বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াই

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে ইরি বোরো চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে বলেছে কৃষকরা বলেছেন। ইতিমধ্যেই অনেক স্থানে কৃষকেরা এ ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছে। নতুন ধানের বাজার মূল্য এখন ভাল থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলায় কৃষকরা। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮’শ ৮৭ হেক্টর। সেখানে চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৭’শ ৫০ হেক্টর জমিতে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮’শ ৮৩ হেক্টোর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে।

এ বছরে ধানে কোন পোকার আক্রমণ ছিলনা। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন স্থানে এ ইরি বোরো ধান চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। কালীগঞ্জ উপজেলাকে শয্যভান্ডার খ্যাত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার বিনোতপুর গ্রামের চিত্ত রনজন বিশ্বাস বলেন,তিনি ৬ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিল। ইতোমধ্যে মাঠের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন। অপর দিকে তেঘরিহুদা গ্রামের আলম মোল্লা এবার কৃষি অফিসের পরামর্শনিয়ে ছন্দ নামের নতুন জাতের ৫ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেন। সেখানে তিনি ৪৬ শতক বিঘার জমিতে প্রতি বিঘায় ধান পাচ্ছেন ৫০ মন হারে। এ ছাড়া অনেক কৃষক শুভলতা ধান পাচ্ছেন বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ মন হাবে। স্থানীয়রা কৃষকরা বলছেন, সার ও শ্রমিক মজুরীর দাম সে সময় কিছুটা কম থাকায় এ ধানের চাষাবাদ এবার অনেকটা বেশি হয়েছে। এখনও পুরোদমে ধান কাটা শুরু না হলেও এ নতুন ধান স্থানীয় হাট বাজারে প্রতিমন গড়ে এখন ১ হাজার টাকা থেকে ১১’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এতে এ অঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় প্রতিটি গ্রামের কৃষকেরা চলতি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা নিজেরা পরিশ্রম করে ধানের আবাদ করেন। এ কারণে তাঁদের খরচ কম হয়। এতে তাঁদের লাভ বেশি হয়। কৃষকেরা বছরের খোরাক নিশ্চিত করতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বোরো ধানের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তবে পরিবারের সদস্যরা অন্য কাজের পাশাপাশি ধান চাষে সহযোগিতা করলে নিশ্চিত লাভবান হওয়া যায়। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বোরো ধান আবাদে কৃষক সচেতন হলে কম খরচে বিষমুক্ত অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব।

কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হবার কারণে চলতি বছর ইরি বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা লাভবান হয়েছেন। কালবৈশাখী ঝড়ো বাতাসে কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এসব ধানে সবই চিটা হয়ে শুকিয়ে লাল হয়ে যাবার কারণে অনেক কৃষক বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ধানের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও বাজার মূল্য ভালো থাকলে তা পুষিয়ে আসবে বলে মনে করছে কৃষকরা। এদিকে কৃষকরা বলছেন বর্তমানে ধান কাঁটার লোকজন পায়া যাচ্ছে খুব কম।

যে কারণে ক্ষেতের ধান কেটে ঘরে তুলতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহায়মেন আক্তার বলেন, উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার ইরি বোরো ধান চাষাবাদ লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি রোপন হয়েছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কালবৈশাখী ঝড়ের আশংকায় কৃষকদের ৮০% পাকা ধান কাঁটার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লে করেন।