শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে মুক্তি পেতে সর্বোত্তম উপায় জিকির

আপডেট: জুন ১৮, ২০২১
0

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব। ’ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু জিকিরের মানে হচ্ছে, লা ইলাহা বলার সময় মনে করতে হবে, আমি দুনিয়ার সবকিছু আমার হৃদয় থেকে বের করে দিলাম। আর ইল্লাল্লাহ বলার সময় মনে করতে হবে, আমি আল্লাহর সবটুকু ভালোবাসা আমার হৃদয়ে ঢুকিয়ে নিলাম। এ জিকির দৈনিক ৩০০ অথবা ৫০০ বার পড়তে হবে। যে হৃদয়ে আল্লাহর জিকির আছে, সেটি জীবিত হৃদয়, আর জিকিরহীন হৃদয় হলো মৃত হৃদয়ের সমান।

আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম জিকির। জিকিরের মাধ্যমেই মানুষের অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে মুক্তি পায়। আল্লাহর দরবারে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।আর জিকির বা আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিরা সব সময় জিকিরে মশগুল থাকেন। কারণ আল্লাহওয়ালা ব্যক্তি যখনই জিকির থেকে গাফেল বা বেখেয়ালি হয় তখনই শয়তান তাঁর কাঁধে চড়ে বসে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন-

‘যে ব্যক্তি পরম দয়াময় আল্লাহর স্মরণে উদাসীন হয়; তিনি তাঁর জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করেন; অতঃপর সে হয় তাঁর সহচর। শয়তানরাই মানুষকে সৎ পথ থেকে বিরত রাখে। আর মানুষ মনে করে তারা সঠিক পথে আছে। (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৩৬ ও ৩৭)
শয়তানের এ আক্রমণ থেকে মুমিন মুসলমানের বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ তাআলা কুরআনের অনেক জায়গায় নসিহত পেশ করেছেন। শয়তানের অবিরাম গোমরাহীর প্রচেষ্টার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন এবং সব জানেন। নিশ্চয় যারা সাবধান হয়, যখন শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দেয়, তখন তারা আত্মসচেতন হয় এবং তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়। আর যারা শয়তানের ভাই, শয়তানেরা তাদেরকে ভ্রান্তির দিকে টেনে নেয় এবং এ বিষয়ে তারা কোনো ত্রুটি করে না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২০০-২০২)

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা মানুষকে বসে-দাঁড়িয়ে-শুয়ে তথা জীবনে প্রতিটি কাজে বেশি বেশি তাঁর জিকির তথা স্মরণের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহর এ জিকির বা স্মরণের ফলে মানুষ প্রথমত শয়তানের গোমরাহী থেকে মুক্তি পায়। জিকিরের মাধ্যমেই বান্দা জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে মুক্তি পাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘যারা দাঁড়িয়ে বসে এবং শুয়ে আল্লাহর (জিকির) স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে এবং (বলে) হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এ সব নিরর্থক সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র। তুমি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯১)