খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল : দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মে ১১, ২০২১
0

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন তার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘‘এখনো ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে আছেন তার(খালেদা জিয়া)। যদিও আল্লাহর রহমতে অনেক ইম্প্রুভ করেছেন। এখন তিনি রুম এয়ারে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন অর্থাত রুমের মধ্যে তার অক্সিজেন লাগছে না।”

‘‘ তার প্রেসার, টেম্পারেচার, অক্সিজেন যেটাকে স্যাচুরেশন বলে এগুলো এখন আপাততভাবে আল্লাহর হুকুমে কিছুটা নরম্যালের দিকে চলে এসছে।”ফখরুল বলেন, ‘‘ তার মূল কতগুলো বিষয় আছে যে বিষয়গুলো এখনো বিপদজনক অবস্থার মধ্যে আছে। তার কিডনির সমস্যা আছে- দ্যাটস এ রিয়েল প্রোভলেম, তার হাটের সমস্যা আছে। যেটাকে ডাক্তাররা এখনো অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আছেন, তারা চেষ্টা করছেন, তারা দোয়া করছেন।”

‘‘ আমরা দলের পক্ষ থেকে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে এভারকেয়ার হাসপাতাল তারা সর্বাত্মক আন্তরিক নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিতসা করছেন। তারা কোনো কিছু বাকী রাখছেন না এবংকি তারা বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসছেন প্রতিনিয়ত, দেশের বাইরেও তারা যোগাযোগ রাখছেন বড় বড় চিকিতসকদের সঙ্গে, সেভাবে তারা এখানে চিকিতসা করার চেষ্টা করেছেন।”

তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা আপনারা জানেন, ইভেন দি প্রাইভেট হসপিটালস আর নট প্রোপারলি ইকোইপ্ট। একমাত্র এভারকেয়ার হাসপাতাল সবচেয়ে বেশি টেকনোলজিক্যাল দিক থেকে উন্নত। তারপরেও এনাফ না। ওরা নিজেরাই মনে করে যে, অনেক লিমিটেশনস আছে। সেই লিমিটেশনগুলো দেখে তখন উনার পরিবার উনাকে বাইরে নেওয়ার আবেদন করেছিলো।”

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা‘য়’ খালেদা জিয়ার চিকিতসা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের চিকিতসকরা ওই সময়ে খু্বই সংযত ভাষায় কথা বলেছেন। উনার অবস্থা ওই সময় স্থিতিশীল ছিলো।”

‘‘ হাসপাতালে আসার পর উনার পরিবার যখন বাইরে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলো তখন দেশনেত্রীর অবস্থা ভেরি ডিভিকাল্ট ছিলো, ইট ওয়াজ ভেরি ক্রিটিক্যাল। ডাক্তাররা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলো। যেকারণে তারা একটা রিপোর্টও দিয়েছিলেন যে, তার অবস্থা ভেরি ক্রিটিক্যাল, আমাদের এখানে যে ব্যবস্থাগুলো আছে সেটা এনাফ নয় তার এটাকে ঠিক করার জন্য। সেজন্য তারা মনে করেছেন যে, যদি বাইরে চিকিতসাটা নেয়া হয় তাহলে ভালো হবে।”

উন্নত চিকিতসার জন্য পরিবারের আবেদনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ তারা(সরকার) এই আবেদন করার পরপর এমনভাবে কথা বললেন যে, সবাই আশাবাদী, জনগনসহ সকলে যে, দিয়ে দেবে। ওটাই আশা করে যে, একজন অসুস্থর সঙ্গে কেউ রাজনীতি করতে চায় না, দিয়ে দেবে।”

‘‘ কিন্তু দুঃখজনকভাবে হঠাত করে বলে তাদের টোন বদলে গেলো, তারা বলে দিলেন যে, আমরা দিতে পারছি না। কেনো পারছেন না সেব্যাপারে তারা যে যুক্তিগুলো দিলেন সেই যুক্তিগুলো একেবারেই অগ্রহনযোগ্য যুক্তি, খোঁড়া যুক্তি।”

‘সরকারের কোনো শর্ত ভঙ্গ করেনি’

গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়ার মুক্ত হওয়ার পর তিনি সরকারের দেয়া শর্তাবলী ভঙ্গ করেননি দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘ উনি যখন বাসায় কোয়ারেন্টাইন ছিলেন উনি কিন্তু একদিনের জন্য তাদের শর্ত ভঙ্গ করেন নাই,উনি একদিনের জন্য ঘরের বাইরে যাননি, বাসার বাইরে যাননি। কোথাও কোনো বক্তব্য দেননি।”

‘‘ আমরা হয়ত মাঝে-মধ্যে আপনাদের বলেছি যে, উনি আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন। উনি কিন্তু নিজে কোনদিন.. এবং কি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে হাতও নাড়াননি।”
খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্যকামনায় দেশবাসীর আবারো দোয়াও চান মির্জা ফখরুল।

‘ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই করোনা মহামারীর এই দুঃসময়েও ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দোয়া করছি গোটা বিশ্ব ও গোটা জাতি করোনামুক্ত হতে পারে এবং ফ্যাসিস্ট যে আগ্রাসন তা থেকে মুক্ত হতে পারে।”