`সীমান্তে গুলিতে নিহত বাংলাদেশের সবাই অপরাধী’ —বিএসএফের ডিজির বক্তব্যে মীর্জা ফখরুলের প্রতিবাদ

আপডেট: জুলাই ২৬, ২০২২
0

‌‌’সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশের সবাই অপরাধী ‘ বিএসএফের ডিজির এমন বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিবাদ করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সম্প্রতি ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের মহাপরিচালক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশের সবাই অপরাধী- এই মন্তব্যে বাংলাদেশ বর্ডার গাড(বিজেবি) মহাপরিচালক নিরব থাকায় তীব্র সমালোচনা করা হয়।”

‘‘ বিএনপি মনে করি, সীমান্তে গুলি করে হত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘন। কেউ অপরাধী হলেও তার বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য আমরা দাবি করছি।”

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অপরাধের সাথে ছাত্রলীগ অভিযুক্তের ঘটনায় ক্ষোভ করে তিনি বলেন, ‘‘ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের এই ধরনের ন্যাক্কারজনক, অসামাজিক কার্য্কলাপকে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে মদদ দেওয়া হয় বলে এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘট্যেছ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও অসামাজিক কার্য্কলাপের অভ্যয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।”

‘‘ আমরা অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দেশে দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতি এবং দেশে দারিদ্র্যতার হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ এবং এবং মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক ৪জন গণতন্ত্র কর্মীকে মৃত্যুদন্ড কার্য্কর করায় নিন্দা জানানো হয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সারাদেশে তিনদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি করবে বিএনপি।

তিনি বলেন, ‘‘ লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিন ও অন্যান্য মহানগর আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই এবং সকল জেলা পর্যায়ে আগামী ৩১ জুলাই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠানে সিদ্ধান্ত দলের স্থায়ী বৈঠকে গৃহীত হয়েছে।”

‘‘ ঢাকায় ২৯ জুলাই মহানগর উত্তর এবং ৩০ জুলাই দক্ষিন মহানগর বিক্ষোভ করবে।”

সোমবার তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তসমূহ জানাতে মঙ্গলবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ সরকারের নিজস্ব ব্যবসায়ীদের মুনাফার স্বার্থের জন্য পরিকল্পিতভাবে নিয়মনীতি বিসর্জন দিয়ে চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের সুযোগ প্রদানের ভয়াবহ দুর্নীতির কারণে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় করার ফলে বর্তমানে এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।এসব বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ইনডেমনিটি আইন তৈরি করে নজিরবিহী দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। এখন শহরে ২/৩ ঘন্টা এবং গ্রামঞ্চলে ৫/৬ ঘন্টা লোডশেডিং জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। শিল্পে ও কৃষিতে উতপাদন ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।”

‘‘ সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির ওপর চরম বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। জ্বালানি সরবারহ নিশ্চিত না করেই বিদ্যুত উতপাদনের বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন সমস্যাকে জটিলতর করেছে। দেশে গ্যাস উতপাদন বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ না নিয়ে বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানির লক্ষ্যই হচ্ছে চুরি এবং নিজস্ব দলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিজেদের দুর্নীতি ও অনৈতিক সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা। নিয়ে শুধুমাত্র লোভের কারণে আজকে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতকে অন্ধকারের পথে নিয়ে গিয়েছে সরকার।”